দীপঙ্কর মণ্ডল: শিক্ষাবিদ হিসেবে পরিচিতি সংশ্লিষ্ট মহলে। শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি ফাউন্ডেশনের অধিকর্তা। জীবনভর শুধুই ছুটেছেন জ্ঞানার্জনের পিছনে। সেসবের সফল প্রয়োগও করেছেন। শান্ত অথচ সমালোচনার মুখে পড়লে শানিত, অকাট্য যুক্তির বাণ। এভাবেই শিক্ষামহলের একটা বড় অংশ তাঁকে চেনে। তবে এবার এই শিক্ষাবিদকেই একটু অন্যভাবে চিনছেন বাংলার মানুষ। তিনি অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায় (Anirban Ganguly)। আপাতত বঙ্গ রাজনীতিতে বোলপুর কেন্দ্রের বিজেপি (BJP) প্রার্থী। নিজস্ব কাজকর্মের বাইরে এই মুহূর্তে মন দিয়েছেন লালমাটির রাজনীতিতে। প্রতিপক্ষ রাজ্যের বিদায়ী মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা। তবে সে অর্থে লড়াই তাঁর দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা অনুব্রত মণ্ডল, অনির্বাণবাবুর ঠিক উলটো মেরুর মানুষ। ঠিক কেমন রাজনৈতিক লড়াইটা? বহু প্রশ্নের উত্তর নিয়ে ‘সংবাদ প্রতিদিন’ ফেসবুক লাইভে অকপট অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়।
সংসদীয় গণতন্ত্রের লড়াইয়ের সঙ্গে সমাজ বদলের আন্দোলনের কিছু প্রাথমিক তফাৎ আছে। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ তথা বোলপুরের বিজেপি প্রার্থী অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে সামান্য আলাপচারিতাতেই তা বোঝা যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, চন্দ্রনাথ সিনহা, অনুব্রত মণ্ডলদের মতো রাজনীতিকদের তাই তাঁর নাপসন্দ। চাঁচাছোলা ভাষায় সবসময় কথা বলা অনুব্রতকে (Anubrata Mandal) তাই তাঁর সবচেয়ে বড় ‘বোমারু’, ‘সন্ত্রাসবাদী’ বলে মনে হয়। ‘সংবাদ প্রতিদিন’-কে তিনি বললেন, ”অনুব্রতর মতো বড় বোমারু, সন্ত্রাসবাদী আমি বাংলার মাটিতে দেখিনি। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে যেভাবে তৃণমূল কর্মীরা শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘিরে ধরেছিল, তাতেই বোঝা যায়, তাঁরা কেমন। তৃণমূল নেতারা তাতে মদত দিচ্ছেন। তাঁদের আচরণ মাসুদ আজহারের মতো সন্ত্রাসবাদীদের মতোই।”
রাজনীতির ময়দানে লড়তে নামলেও ঠিক মূলস্রোতের রাজনীতিতে মন বসেনি। এখনও শিক্ষা-সংস্কৃতিই তাঁকে টানে। তাই জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হলেও তাঁর কাজের অভিমুখ হবে সেদিকেই। তাও জানালেন বোলপুরের বিজেপি প্রার্থী। বললেন, ”বোলপুরের মাটি বিশ্বের দুই প্রবাদপ্রতিম বাংলা সাহিত্যিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং জয়দেবের। একজনকে মনে রেখেছেন সকলে। কিন্তু জয়দেব বিস্মৃতপ্রায়। তাঁকে নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কিন্তু সবাই জানেন, তাঁর জন্মস্থান এখানেই। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে তাঁর ‘গীতগোবিন্দ’ এক বড় সম্পদ। আমি এখানে জয়দেবের স্মৃতিতে জাতীয় স্তরের একটি বাউল কেন্দ্র গড়ে তুলতে চাই। যাতে তাঁকে চর্চার ক্ষেত্র আরও বিস্তৃত হয়।”
বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, যাঁকে নিয়ে সম্প্রতি বেশ কিছু বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তাঁকে নিয়ে অনির্বাণবাবুর বক্তব্য, উনি বিজেপি বা আরএসএস ঘনিষ্ঠ কেউ নন। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সুপারিশে নিয়োগ করা হয়েছিল। শিক্ষাবিদ প্রার্থীর কাছে স্বভাবতই প্রশ্ন রাখা হল নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি (NEP 2020) নিয়ে। নীতিটি আন্তর্জাতিক স্তরে প্রশংসিত, সময়োপযোগী বলে মনে করেন অনির্বাণবাবু। তাঁরা ক্ষমতায় এলে দ্রুতই রাজ্যে লাগু করা হবে বলেও জানান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.