কৃষ্ণকুমার দাস: জমি আন্দোলনের ২০০৭ সালের রক্তস্নাত সূর্যোদয় দিবসের বর্ষপূতিতে একইদিনে সমাবেশ, পালটা সভা ও আবার তার জবাবি সভাও হচ্ছে নন্দীগ্রামে। আজকের এই তিন সভা ঘিরে ক্রমশ উত্তাপ বেড়েই চলেছে স্বাধীনতা সংগ্রাম ও পরবর্তীতে নানা আন্দোলন-লড়াইয়ের গর্ভগৃহ মেদিনীপুরে। পক্ষ ও বিপক্ষ মিলিয়ে অবশ্য তিনটি সভার মধ্যে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন রাজ্যের পরিবহণ, সেচ ও জলসম্পদমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)।
রক্তস্নাত সূর্যোদয় দিবসের ১৩তম বর্ষপূর্তিতে নন্দীগ্রাম (nandigram) -এর ‘তেখালি চলো’ কর্মসূচিতে সকাল সাড়ে দশটায় স্কুলমাঠে হবে স্মরণসভা। এর জন্য সোমবার বেলা থেকেই পূর্ব মেদিনীপুর ছাড়াও অন্য জেলার ‘শুভেন্দুর অনুগামী’রা সেখানে আসতে শুরু করে দিয়েছেন। এপ্রসঙ্গে এদিন নন্দীগ্রাম ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির অন্যতম সম্পাদক আবু তাহের জানিয়েছেন, “আগামিকাল জনপ্লাবন হবে তেখালি মাঠে।”
এদিকে মাত্র ২৪ ঘণ্টার নোটিশে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের ডাকে শহিদ স্মরণে নন্দীগ্রামের হাজরাকাটায় পালটা সভা ডাকা হয়েছে। সেই সমাবেশের প্রধান বক্তা হিসেবে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের নাম প্রচার হয়েছে। পালটা এই সভার উদ্যোক্তা রামনগরের তৃণমূল বিধায়ক অখিল গিরির শিবির। দলীয়স্তরে শুভেন্দু শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক। বস্তুত এই বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে সোমবার কলকাতায় পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, “শুভেন্দুর উচিত আগামিকাল দলের কর্মসূচিতে যোগ দেওয়া। দলের প্রতিটি সদস্যরই দায়িত্ব ও কর্ত্যব দলীয় নির্দেশ মেনে চলা।” এরপরই পুরমন্ত্রী জানান, নন্দীগ্রাম আন্দোলন হয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূলের পতাকা নিয়ে। আমরা সবাই নেত্রীর সেই লড়াইয়ের জন্য গর্ববোধ করি। সেদিন বহু মানুষ প্রাণ দিয়েছিলেন, তাঁদের স্মরণ করতে দলীয় সভা হচ্ছে। সেই সভায় দলীয় নির্দেশে অনেকে যাবেন।
সোমবার দুপুরে হাজরাকাটায় পালটা সভার খবর আসতেই নয়া তৎপরতা শুরু হয়ে যায় শুভেন্দু-শিবিরে। সন্ধ্যায় ঘোষণা করা হয়েছে, ফিরহাদ হাকিমের সভার সময়েই শহিদ রেজাউল করিমের স্মরণে সমাবেশ হবে নন্দীগ্রামের চৌরঙ্গিতে। এই সভার প্রধান বক্তা তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। সভায় থাকবেন খেজুরির বিধায়ক রণজিৎ মণ্ডল, জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র ও প্রাক্তন জেলাপরিষদ সভাধিপতি মধুরিমা মণ্ডলও। হাজরাকাটার দলীয় সভার পালটা সভা কেন ফের হচ্ছে? এই প্রশ্নের জবাবে ভূমি উচ্ছেদ কমিটির নেতা তাহের বলেন, “শহিদ রেজাউল করিম নন্দীগ্রাম-২ নম্বর ব্লকের নেতা ছিলেন। হাজরাকাটা এই ব্লকে পড়ছে না। তাই এই স্মরসভা, আর এটা আগে থেকেই ঘোষণা করা ছিল, নতুন নয়।” তবে নন্দীগ্রামে একইদিনে তিনটি সভা হলেও ১০ নভেম্বর তেখালি স্কুল মাঠে শুভেন্দু অধিকারী কী বক্তব্য রাখেন তা জানতেই এখন উদগ্রীব রাজনৈতিক মহল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.