সন্দীপ মজুমদার, উলুবেড়িয়া: এবার গ্রামের একটি বেহাল কাঠের সেতু নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছে তীব্র রাজনৈতিক তরজা। হাওড়া জেলার শ্যামপুর থানার বালিচাতুরী ও জোয়ারকোল গ্রামের সংযোগকারী কাঠের সেতুটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় রয়েছে। যার ফলে এই সেতুর নিচে দিয়ে বয়ে যাওয়া দামোদর নদের দু’পারের মানুষ চরম বিপাকের সম্মুখীন হয়েছেন। শেষমেষ প্রশাসনের নজর কাড়তে বেহাল সেতুটির ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেন স্থানীয় এক যুবক। তারপরই ওই পোস্টকে কেন্দ্র করে নানান রকম টিপ্পনি ও পালটা টিপ্পনি শুরু হয়েছে।
জোয়ারকোল গ্রামের যুবক শুভ জানা গত শুক্রবার ফেসবুকের ‘আমরা শ্যামপুর (হাওড়া) বাসী’ গ্রুপে ওই ছবিটি পোস্ট করেন। তারপরই ক্ষোভ উগরে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সেতুটির মাঝের অংশ ভয়ঙ্করভাবে বসে গিয়েছে। যা দেখলে সমুদ্রের ঢেউয়ের কথা মনে পড়ে যায়। বেশকিছু ব্যক্তি শাসকদলের উদ্দেশ্যে তীর্যক মন্তব্যও করেন। কেউ কেউ সরাসরি বেহাল সেতুর জন্য শ্যামপুরের বিধায়ক কালীপদ মণ্ডলের ব্যর্থতাকে দায়ী করেন। আবার কেউ বলেন, সেতুটির নীল-সাদা রঙ চটে গিয়েছে তাই এই অবস্থা। নীল-সাদা রঙ করে দিলেই সেতুটি পুনরায় আগের মতো হয়ে যাবে। এক ব্যক্তি পোস্ট করেন, “সেতুর রঙটা কী সুন্দর! রঙটা নিশ্চয়ই কলকাতার ব্যানার্জি হার্ডওয়ার থেকে কেনা?” আবার একজন পোস্ট করেন, “জয় শ্রীরাম বলে ধরনায় বসে পড়ুন।” একজন লিখেছেন, “মোদিজিকে কল করো।” এইরকম পক্ষে বিপক্ষে নানান মন্তব্য করা হয়েছে শুভ জানার এই পোস্টকে কেন্দ্র করে।
এপ্রসঙ্গে শুভ জানা বলেন, “বেশ কয়েক মাস ধরে প্রায় ৬০ ফুট দীর্ঘ এই সেতুটি এভাবেই বেহাল হয়ে পড়ে রয়েছে। এখনও এটিকে সারানোর প্রয়োজন অনুভব করেনি প্রশাসন। যার ফলে ওই দুই গ্রামের অসংখ্য মানুষ সেতু পেরিয়ে এপারের গ্রাম থেকে ওপারের গ্রামে যাতায়াত করতে পারছেন না। যাঁরা যাচ্ছেন তাঁরা একরকম জীবনের ঝুঁকি নিয়েই সেতু পারাপার করছেন। যাঁদের মোটরবাইক রয়েছে তাঁদের একপাড় থেকে অন্যপাড়ে যাওয়ার জন্য অনেকটা ঘুরে যেতে হচ্ছে। যা পরিস্থিতি তাতে যে কোনও মুহূর্তে সেতুটি ভেঙে দামোদরের জলে তলিয়ে যেতে পারে। স্থানীয় ইটভাটাগুলি নদীর বুক থেকে যথেচ্ছভাবে মাটি তোলার কারণেই সেতুর খুঁটিগুলি নড়বড়ে হয়ে গিয়েছে। তার ফলেই সেতুটি এরকম বেহাল হয়ে পড়েছে।”
যদিও বালিচাতুরী গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শ্যামল পুরকাইত জানান, কিছুদিন হল সেতুটি বেহাল হয়ে পড়েছে। এই সেতুটি ছাড়াও চন্দনপুর-গাজনকোল সেতু এবং মাতাপাড়া স্লুইসগেটটি সংস্কারের জন্য শ্যামপুরের বিধায়ক কালীপদ মণ্ডল ইতিমধ্যেই সেচ দপ্তরের সঙ্গে কথাও বলেছেন। খুব শীঘ্রই সেচ দপ্তরের বাস্তুকাররা এলাকা পরিদর্শনে আসবেন, তারপরই এই সমস্যা গুলির সমাধান হয়ে যাবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় শুধু মন্তব্য করে দিলেই হয় না, গত তিন-চার মাস ধরে দীর্ঘ নির্বাচনী প্রক্রিয়া চলছিল। নির্বাচনী আচরণবিধি লাগু থাকার জন্য সমস্ত সরকারি কাজ বন্ধ ছিল। তাই এই সময়ে বেশ কিছু গ্রামীণ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হয়নি। এটাও মানুষকে বুঝতে হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.