ধীমান রায়, কাটোয়া : এক গ্রাহককে ভুল করে ৩০ হাজার টাকা বেশি দিয়ে দিয়েছিলেন ক্যাশিয়ার। পরে হিসাবে ধরা পড়লেও কিছুতেই ব্যাংককর্মীরা জানতে পারছিলেন না, কাকে ওই টাকা বেশি দেওয়া হয়েছে। সোমবার ভাতারের একটি রাস্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের শাখায় এসে নিজেই ওই ৩০ হাজার টাকা ফেরত দিয়ে গেলেন গ্রাহক। পেশায় গৃহশিক্ষক সৌরভ রায় নামে ওই গ্রাহকের বাড়ি মঙ্গলকোটের পলসোনা গ্রামে। তাঁর এই সততায় মুগ্ধ ব্যাংকের কর্মীরা।
[ জন্মদিনের অঙ্গীকার, সাবালক হয়েই রক্তদান আসানসোলের অনিমেষের ]
আগামী বৃস্পতিবার সৌরভবাবুর বিয়ে। অনুষ্ঠানের খরচের জন্য গত শুক্রবার ব্যাংক থেকে তিনি ৩০ হাজার টাকা তুলতে এসেছিলেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলকোটের পলসোনা গ্রামের বাসিন্দা সৌরভ রায়ের ভাতারের একটি রাষ্ট্রায়্ত্ত ব্যাংকের শাখায় আ্যকাউন্ট আছে। তাঁর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে আগামী বৃহস্পতিবার মঙ্গলকোটের কৈচরে তাঁর বিয়ে ঠিক হয়েছে। অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিয়ে কয়েকদিন ধরেই ব্যস্ত রয়েছেন সৌরভবাবু। ঘটনার প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, গত শুক্রবার তিনি ভাতারে তাঁর আ্যাকাউন্ট থেকে ৩০ হাজার টাকা তুলতে এসেছিলেন। সেদিন ভুল করে ক্যাশিয়ার তাঁকে ৬০ হাজার টাকা দিয়ে দিয়েছিলেন। যা বাড়ি গিয়ে জানতে পারেন সৌরভবাবু। কীভাবে ঘটল এই বিভ্রাট? সৌরভ রায় বলেন, “আমার আ্যকাউন্টে ছিল ৩১ হাজার টাকা। আমি বিয়ের খরচের জন্য ৩০ হাজার টাকা তুলতে আসি। ক্যাশিয়ারবাবু আমাকে ১৫টি ২০০০ টাকার নোট হাতে দিয়েছিলেন। ক্যাশ কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে আমি টাকা গুনেও নিয়েছিলাম। ব্যস্ততা ছিল। আমি টাকা ও পাশবই ব্যাগে ভরে বাড়ি চলে গিয়েছিলাম। ওদিন সন্ধ্যায় পাশবই বের করে আলমারিতে রাখার সময় দেখি পাশবইয়ের ভিতরেও ১৫টি দু-হাজার টাকার নোট রয়েছে। তখন বুঝি ক্যাশিয়ার ভুল করে দুবার ৩০ হাজার টাকা করে দিয়ে দিয়েছেন। ততক্ষণে ব্যাংক বন্ধ হয়ে যায়। তাই আর ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি।”
[ মর্মান্তিক! সাফাই করতে গিয়ে সেপটিক ট্যাঙ্কে পড়ে মৃত্যু ৩ শ্রমিকের ]
এদিন সোমবার বাবা জয়ন্ত রায়কে সঙ্গে নিয়ে সৌরভবাবু ব্যাংকে আসেন। তিনি ক্যাশিয়ার অমিতকুমারের হাতে ৩০ হাজার টাকা ফিরিয়ে দিয়ে যান। অমিতকুমার বলেন, ভুল করে ৩০ হাজার টাকা সৌরভবাবুকে বেশি দিয়ে দিয়েছিলাম। পরে হিসাবে মিলছিল না। কিন্তু টাকা কাকে বেশি দিয়েছিলাম তা বোঝার উপায় ছিল না। ওই গ্রাহকের সততা প্রশংসনীয়। সৌরভ রায়ের সঙ্গে যাঁর বিয়ে হতে চলেছে কৈচরের বাসিন্দা হবু কনে সেবা চোঙদার বলেন, “ঘটনার কথা শুনেছি। আমি খুব খুশি একজন সৎ মানুষকে স্বামী হিসাবে পেতে চলেছি।”
ছবি: জয়ন্ত দাস।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.