অর্ণব দাস, বারাসত: স্বপ্ন ছিল ইঞ্জিনিয়ার (Engineer) হওয়ার। স্বপ্ন পূরণ করতে মেধার জোরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সল্টলেক ক্যাম্পাসে ভরতি হয়েছিলেন বারাসতের (Barasat) বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন যুবক। কিন্তু র্যাগিংয়ের ‘শিকার’ হয়ে সেই স্বপ্ন থেকে গিয়েছে অধরা। দু’বছর ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার পর বাড়ি ফিরে আর কলেজ ক্যাম্পাসে যাওয়ার সাহস পাননি সোমনাথ দে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্রর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ((JU Student Death) ঘটনার নেপথ্যে র্যাগিংয়ের (Ragging) অভিযোগ নিয়ে এই মুহূর্তে তোলপাড় রাজ্য। এরই মাঝে বারাসতের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন যুবকের র্যাগিংয়ের অভিযোগে ইঞ্জিনিয়ার না হতে পারার খবর সামনে এল।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বারাসতের কালিকাপুরের বাসিন্দা সোমনাথ। ২০০৭-০৮ শিক্ষাবর্ষে জয়েন্ট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সল্টলেক (Salt Lake) ক্যাম্পাসে ভরতি হয়েছিলেন। বিশেষ কোটায় তাঁর র্যাঙ্ক ছিল ১০১। অভিযোগ, ভরতির পর থেকেই তাঁর উপর চলত ‘দাদা’দের অত্যাচার। এমনিতেই তিনি শারীরিকভাবে আর পাঁচজনের মতো নন। তার উপর প্রাক্তনী অথবা সিনিয়রদের অত্যাচার সহ্য করে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া তাঁর পক্ষে কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তাই নিয়মিত ক্লাস করা হতো না সোমনাথের।
শেষে বাধ্য হয়েই দ্বিতীয় বর্ষের কোর্স শেষ করে বাড়ি ফিরে আসেন সোমনাথ। তৃতীয় এবং চতুর্থ বর্ষে আর পড়তে পারেননি। বর্তমানে সোমনাথ দূরশিক্ষা (Distance Education) অঙ্কে স্নাতকোত্তর করছেন। সোমনাথ বলেন, “আমাকে হস্টেলের ভিতরে ঢুকে মারধর করত। বিভিন্ন বিকৃত অঙ্গভঙ্গি করতে হতো। বাধ্য হয়ে চাপ সহ্য করতে না পেরে কোর্স শেষ হওয়ার আগেই বাড়ি চলে আসি। আসলে বাংলার বিভাগের প্রথম বর্ষের নিহত ছাত্রের মতো আজও যাদবপুরের অনেকে হতাশায় ভুগছে।” ফের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার দাবি জানিয়ে তাঁর মা গৌরী দে বলেন, ”ছেলে র্যাগিংয়ের কারণে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষ না করেই বাড়ি ফিরেছে। ও অত্যন্ত মেধাবী ছেলে। আমাদের দাবি, ওর পড়াশোনা যাতে সম্পূর্ণ করা যায়, তার ব্যবস্থা করা হোক।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.