দেবব্রত মণ্ডল, বাসন্তী: একাধিক মহিলার সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক, অত্যাচারের অভিযোগে স্বামীকে তালাক দেওয়ার শাস্তি! ধারালো অস্ত্রের ঘায়ে বধূর হাত কেটে নেওয়ার অভিযোগ স্বামীর বিরুদ্ধে। রবিবার সকালে বাসন্তী (Basanti) পঞ্চায়েতের কৃষ্ণনগর শ্রীরামপুর গ্রামের ঘটনা। অভিযুক্ত পলাতক স্বামীকে ধরতে এলাকায় চিরুনি তল্লাশি চলছে।
হাত খোয়ানো জরিনার প্রায় ২০ বছর আগে প্রথম বিয়ে হয়। কিন্তু স্বামীর বিরুদ্ধে হিংসা, অত্যাচারের অভিযোগে বছর পাঁচেক বাদেই দুই ছেলেকে তাঁর কাছে রেখে বাপের বাড়ি চলে আসেন তিনি। বাবার মৃত্যু হলে আর্থিক কষ্টের মধ্যে কাজের সন্ধানে দিল্লি ( Delhi) চলে যান জরিনা। গাজিয়াবাদে কাগজ কুড়ানির কাজ করতেন তিনি। সেখানে পরিচয় হয় একই পেশায় যুক্ত শাহজাহান মোল্লার সঙ্গে। প্রায় ১৪ বছর আগে দুজনে বিয়ে করেন। জরিনার বাপের বাড়ি প্রথমে এই বিয়েতে সম্মতি না দিলেও পরে মেনে নেয়। বছর তিনেক আগে দুজনে বাসন্তীর কৃষ্ণনগর শ্রীরামপুর গ্রামে বাড়ি বানিয়ে থাকতে শুরু করেন। তাদের ৮ ও ১১ বছরের দুটি ছেলে আছে।
অভিযোগ, জরিনাকে বিয়ের পর থেকেই একাধিক মহিলার সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়ান শাহজাহান। প্রতিবাদ করলেই চলত অকথ্য অত্যাচার। দিল্লি থেকে গ্রামের বাড়িতে আসার পর অত্যাচার আরও বাড়ে। সহ্য করতে না পেরে প্রায় এক সপ্তাহ আগে কাজীর কাছে গিয়ে স্বামীকে তালাক দেন জরিনা।
আজ ঘরে তালা দিয়ে বাপের বাড়ি গিয়েছিলেন তিনি। অভিযোগ, সুযোগ বুঝে জানালা ভেঙে ঘরে ঢুকে লুকিয়ে ছিলেন শাহজাহান। তালা খুলে ঢুকতেই ধারালো অস্ত্র নিয়ে জরিনার উপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন তিনি। জরিনা চিৎকার করলে তাঁর বা হাত কেটে দেন। ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। তাঁদের তাড়া খেয়ে শাহজাহান পালিয়ে যান। প্রতিবেশীরা রক্তাক্ত জরিনাকে উদ্ধার করে বাসন্তী ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন চিকিৎসকরা। সেখানে অবস্থা আরও খারাপ হলে কলকাতার চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে রেফার করেন ডাক্তাররা। যদিও জরিনার বাপের বাড়ির লোকজন তাঁকে বাসন্তীর সোনাখালি এলাকায় একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করেন। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন তিনি।
জরিনার দিদি হালিমা সর্দার বলেন, “শাহজাহানের সব অত্যাচার সংসার করার তাগিদে বোন মুখ বুজে সহ্য করতেন। অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় কয়েকদিন আগে কাজী ডেকে শাহজাহানকে তালাক দেন বোন। তাই ওকে খুন করার ছক করেন শাহজাহান। আজ ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে বা হাত কেটে দেয়। পুলিশ যেন তার কঠিনতম শাস্তির ব্যবস্থা করে”।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.