নন্দন দত্ত, সিউড়ি: নির্বাচনী নিরাপত্তা বাড়াতে মহম্মদবাজার এলাকায় প্রতিটি অঞ্চলে একজন করে প্রাক্তন ওসি নিয়োগ করল জেলা পুলিশ প্রশাসন। একইসঙ্গে সাময়িকভাবে নিয়োগ করা হল গোয়েন্দা সিভিক। যাতে এলাকার রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা আগাম আঁচ করতে পারে পুলিশ প্রশাসন, তাই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে খবর। পাশাপাশি ঝাড়খণ্ডের যে বহিরাগতের তত্ত্ব খাড়া করেছে, শাসকদল তার প্রকৃত তথ্য আগাম জানতে পুলিশের এই নয়া উদ্যোগ।
[ পদ্ম নয়, নলহাটিতে আমেই ভরসা বিজেপির দুই প্রার্থীর ]
মনোনয়ন পর্ব থেকেই মহম্মদবাজারে পাঁচ গোল খেয়ে বসে রয়েছে শাসকদল। সব জায়গায় প্রতিরোধ করা গেলেও মহম্মদবাজারে বিরোধীরা কার্যত ছিলেন অপ্রতিরোধ। বরং হাজার দশেক মানুষকে নিয়ে মিছিল করে এসে বিডিও অফিস দখল করে বিরোধী প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র দিয়েছেন। এখান থেকেই তৃণমূলকে হটাতে বিজেপি ও সিপিএমের গোপন আঁতাঁতের কথা উঠছে। পুলিশ প্রশাসন ও শাসকদলের অভিযোগ, গত ৭ এপ্রিল ঝাড়খণ্ড থেকে ভাড়া করা গুন্ডাদের এনে মহম্মদবাজার দখল করেছিল বিরোধীরা। বাস্তবে তদন্তে নেমে পুলিশের নজরে এসেছে এলাকার আদিবাসী গ্রাম থেকে সবচেয়ে বেশি সমর্থক সেদিন হাজির হয়েছিল ব্লকে। তাদের তদন্তে কদমহিড় গ্রামের ১১০টি পরিবারের সকলেই সেদিন হাজির হয়েছিল মনোনয়ন মিছিলে। একইভাবে চরিচা গ্রামের আদিবাসীরা হাজির হয়েছিল পায়ে হেঁটে। তাই পুলিশ আগাম খবর পেতে প্রতিটি গ্রামে গোয়েন্দা সিভিক নিয়োগ করেছে। তাদের কাজ কারা কোন বাড়িতে প্রচারে কখন যাচ্ছে। সে গ্রামে বহিরাগত কেউ আসছে কিনা তা দেখেও তৎক্ষণাৎ পুলিশকর্তাদের জানান।
[ জল রাখার সহজ পন্থা আবিষ্কার করে জাপানে পাড়ি সিউড়ির পড়ুয়া ]
বিজেপির অভিযোগ, শাসকদলের হুমকির ভয়ে অনেকেই এখনও গ্রামছাড়া। তারা প্রার্থীর হয়েও প্রচার করতে পারছে না। আবার নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসনকে। কারণ, জেলার মধ্যে মহম্মদবাজারে ২৭টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে ২১টিতে নির্বাচন হবে। গ্রাম পঞ্চায়েতের ১১০টি আসনের মধ্যে ৮৯টি আসনে নির্বাচন হবে। তাই পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে মহম্মদবাজারে নির্বাচন হতে চলা ১২১টি বুথের পূর্ণাঙ্গ হদিশ নেওয়া হচ্ছে। যার জন্য ওই ব্লকের ১২টি অঞ্চলে ১২ জন পুলিশ অফিসারকে নিয়োগ করা হয়েছে। যারা আগে ওই এলাকায় ওসি হিসাবে কাজ করেছেন বা ওই এলাকা সম্বন্ধে অবহিত আছেন, সেই সব ওসি-রা বৃহস্পতিবার থেকেই নিজেদের এলাকায় পুলিশ নিয়ে টহলদারি চালাচ্ছেন। ১২টি এলাকায় ১২ জন ওসি-র মধ্যে দু’জন ইনস্পেক্টর, ছ’জন এসআই ও দু’জন এএসআই-কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। জেলা পুলিশের শীর্ষকর্তাদের কথায়, ওই সব অফিসাররা নিজেদের এলাকায় নজরদারি চালাতে পারবেন ও নির্বাচনের আগে থেকেই পরিস্থিতি কোনদিকে যাচ্ছে তা অনুমান করে ব্যবস্থা নিতে পারবেন। পাশাপাশি গোয়েন্দা সিভিকদের পাঠানো তথ্য যেন গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়, তার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.