Advertisement
Advertisement

Breaking News

ট্রলারডুবি

৪ দিন কেটে গেলেও নিখোঁজ প্রিয়জন, ট্রলারডুবির পর থেকে শোকস্তব্ধ কাকদ্বীপ

নিখোঁজ মৎস্যজীবীদের পরিবারে এখন শুধুই কান্নার রোল।

Even after 4 days Of accident, 25 fishermen still missing in Bay of Bengal
Published by: Sayani Sen
  • Posted:July 9, 2019 9:22 pm
  • Updated:July 9, 2019 9:24 pm  

সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: বঙ্গোপসাগরের ট্রলারডুবির ঘটনায় এখনও নিখোঁজ ২৫ জন মৎস্যজীবী। নিখোঁজ মৎস্যজীবীদের পরিবারে এখন শুধুই কান্নার রোল। কারও স্বামী, কারও বাবা, কারও বা ছেলে গিয়েছিলেন ট্রলারে চেপে ইলিশ ধরতে। উদ্দেশ্য ছিল দু’টো পয়সা ঘরে এনে প্রিয়জনদের মুখে হাসি ফোটানো। তাঁদের অনেকেই এখনও নিখোঁজ। আর কোনওদিন তাঁরা ঘরে ফিরবেন কি না জানা নেই পরিজনদের। তবু প্রিয় মানুষটির ঘরে ফেরার অপেক্ষায় দিন কাটছে তাঁদের৷

আরও পড়ুন:  স্কুলে দুষ্কৃতী তাণ্ডবে নাজেহাল, স্থানীয়দের সাহায্যপ্রার্থী ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক]

কাকদ্বীপ মহকুমা প্রশাসন সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত ২৫ জন মৎস্যজীবীর খোঁজ মেলেনি। সমুদ্রে জোর তল্লাশি চালাচ্ছে ভারতীয় ও বাংলাদেশ উপকূলরক্ষী বাহিনী। নিখোঁজ মৎস্যজীবীদের পরিবারে উঠেছে কান্নার রোল। তবে সবারই আশা, তাঁদের পরিবারের মানুষটিও একদিন ফিরবে। নিখোঁজদের মধ্যে রয়েছেন মাধব দাস নামে বছর বাইশের এক মৎস্যজীবী৷ তাঁর স্ত্রী শাপলা দাস ও চারমাসের শিশুসন্তানকে ঘরে রেখে বেরিয়েছিলেন ইলিশ ধরতে। অসুস্থ শিশুসন্তানটির কথা ভেবে ‘যাবো না যাবো না’ করেও এফ বি নয়ন ট্রলারে চেপে গভীর সমুদ্রে গিয়েছিলেন তিনি। নুন আনতে পান্তা ফুরানোর সংসারে না বলার যে কোনও উপায় নেই৷ যাওয়ার সময় স্ত্রী শাপলাকে বলে গিয়েছিলেন ঘরে থাকা আংটি বন্ধক দিয়ে অসুস্থ সন্তানকে ডাক্তার দেখাতে। চোখের জল মুছতে মুছতে শাপলা বলেন, “ও বলে গিয়েছিল আংটিটা বন্ধক দিয়ে বাচ্চাটার চিকিৎসা করাতে৷ ইলিশ ধরে যখন ফিরব, তখন তো অনেক টাকা রোজগার হবে। সেই টাকা দিয়েই বন্ধক দেওয়া আংটিটা ছাড়িয়ে আনব।” কাঁদতে কাঁদতে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন মাধবের স্ত্রী৷ স্বামী ফিরলে আর কোনওদিন সমুদ্রে যেতে দেবেন না বলেই বিড়বিড় করছেন তিনি৷

Advertisement

KAKDWIP

[আরও পড়ুন:  কাটমানির বিনিময়ে চাকরি! উপপ্রধানের বিরুদ্ধে বিডিও-র কাছে অভিযোগ গ্রামবাসীদের]

শাপলার মতোই আরেক মৎস্যজীবীর স্ত্রী অঞ্জলি দাসের অবস্থাও একইরকম। মাসচারেক আগে কাকদ্বীপের অক্ষয়নগরের স্বপন দাসের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। স্বপনও ট্রলারডুবিতে নিখোঁজ মৎস্যজীবীদের মধ্যে একজন৷ তাঁর স্ত্রী অঞ্জলি স্বামীর নিখোঁজ হওয়ার খবর শোনার পর থেকেই মাঝেমধ্যেই জ্ঞান হারাচ্ছেন৷ বারবার অঞ্জলি বলছেন, “ও বলে গিয়েছিল তাড়াতাড়ি ফিরে আসবে, কবে ফিরবে তোমরা কেউ জানো?” নতুন বউয়ের এই প্রশ্ন শোনামাত্রই কান্নায় ভেঙে পড়ছেন সকলেই৷ কাকদ্বীপের অক্ষয়নগর, কালীনগর, পুকুরবেড়িয়া গ্রামগুলি থেকেই বঙ্গোপসাগরে ইলিশ ধরতে গিয়েছিলেন নিখোঁজ পঁচিশজন মৎস্যজীবী। চারদিন কেটে গেলেও তাঁদের কোনও খোঁজ না মেলায় গ্রামগুলিতে এখন শুধুই শ্মশানের নীরবতা। মাঝেমধ্যেই এবাড়ি-ওবাড়ি থেকে ভেসে আসা কান্নার আওয়াজ ভেঙে খানখান করে দিচ্ছে সেই নীরবতা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement