রিন্টু ব্রহ্ম, কালনা: নববর্ষের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে মাঝরাতে ইভটিজারদের হাতেনাতে পাকড়াও করে চরম শিক্ষা দিল কালনার কন্যাশ্রীরা। সাত কন্যাশ্রীর সাহসিকতায় শাস্তি পেল তিন ইভটিজার। কানমলা খেয়ে, রাস্তায় দণ্ডি কেটে কন্যাশ্রীদের পা ধরে ক্ষমা চেয়ে তবে পার পেল ওই তিন রোড-রোমিও। মঙ্গলবার সকাল থেকেই সেই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ল মোবাইলে-মোবাইলে। কন্যাশ্রীদের এই সাহসিকতা কুর্নিশ জানাচ্ছেন সকলে।
কেউ স্কুলে পড়ে, কেউ আবার কলেজ ছাত্রী। কালনা শহরের বড় মিত্রপাড়ায় বাড়ি সাত কন্যাশ্রীর। সোমবার নববর্ষ উপলক্ষে কালনার বাঘনাপাড়ায় একটি নৃত্যানুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে গিয়েছিল তারা। অনুষ্ঠান থেকে ফিরতে রাত হয়ে যায়। পরিবারের এক মহিলা সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে একটি অটোতে চেপে বাড়ি ফিরছিল ওই সাত ছাত্রী। ওই অটোচালকের মেয়েও নাচের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিল। ওই ছাত্রীদের অভিযোগ, বাঘনাপাড়া থেকে এসটিকেকে রোড ধরে ফেরার সময় একটি স্কুটিতে করে তিন যুবক তাদের পিছু নেয়। নানা কুমন্তব্যও করতে থাকে তারা। এমনকী, স্কুটির হেডলাইট আলো ইচ্ছাকৃতভাবে অটোর পিছনে বসা মেয়েদের মুখে ফেলতে থাকে। প্রতিবাদ করলে অটো চালক ও ছাত্রীদের সঙ্গে যে মহিলা ছিলেন, তাঁর সঙ্গে ইভটিজারদের কথা কাটাকাটিও হয়। শেষপর্যন্ত যখন অটোটি কালনার শহরে বড় মিত্রপাড়ায় পৌছায়, তখন অটো থেকে নেমে ওই তিন যুবককে ধরে ফেলে ছাত্রীরা। তাদের চিৎকারে পাড়ার লোকেরাও চলে আসেন। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে রাস্তায় দণ্ডি কেটে ছাত্রীদের পায়ে ধরে ক্ষমা চায় ওই তিন যুবক। আর পুলিশে অভিযোগ করেননি ওই ছাত্রীর পরিবার লোকেরা। ক্ষমা চেয়ে নেওয়ার ইভটিজারদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
এদিকে কালনা শহরে কন্যাশ্রীদের এমন সাহসিকতার প্রশংসা পঞ্চমুখ সকলেই। কালনা মহিসমর্দিনী হাইস্কুলের জীবনবিজ্ঞানের শিক্ষক তাপস কার্ফা বলেন, “খুবই সাহসিকতার কাজ করেছে ওই ছাত্রীরা। খুবই প্রশংসীয়। প্রশাসন ছাত্রীদের এগিয়ে চলায় সহায়তা করে। তারা নিজেরাও যে যে সাহসী হয়ে উঠেছে, আত্মসম্মান ও আত্মরক্ষায় এগিয়ে আসছে, সমাজের পক্ষে তা খুবই মঙ্গলজনক।”
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.