বাবুল হক, মালদহ: করোনা আতঙ্কের মধ্যেই মুরগির মড়ক শুরু হল মালদহে। আর এ নিয়েই মঙ্গলবার সকাল থেকে শোরগোল পড়ে গিয়েছে জেলার প্রশাসনিক মহলে। ওল্ড মালদহ ব্লকের মাধাইপুর গ্রামের একটি পোলট্রি ফার্মে হঠাৎই প্রায় ৫০০ বয়লার মুরগি মারা গিয়েছে বলে খবর মেলে। খবর পেয়ে এলাকায় ছুটে গিয়েছেন প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের আধিকারিকরা। এই মড়কের ঘটনায় বার্ড ফ্লু-র পাশাপাশি করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়।
সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধাইপুর গ্রামের এই মড়কের বিষয়টি জানাজানি হতেই বাসিন্দাদের মধ্যেও শোরগোল পড়ে গিয়েছে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে তড়িঘড়ি শতাধিক মৃত মুরগি মাটি খুঁড়ে পুঁতে ফেলার ব্যবস্থা করে পোলট্রি ফার্ম কর্তৃপক্ষ। যদিও এনিয়ে অসন্তোষ ছড়িয়েছে গ্রামবাসীদের মধ্যে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, মৃত মুরগিগুলিকে মাটিতে না পুঁতে পুড়িয়ে ফেলা উচিত ছিল। এখন এলাকায় সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। বাসিন্দারা ওই পোলট্রি ফার্মের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। এ নিয়ে সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ মুখে কুলুপ এঁটেছে বলে অভিযোগ। মালদহের প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের উপ-অধিকর্তা অরূপ মাঝি বলেন, “এনিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই। এই সময় মুরগির রানিক্ষেত নামক এক ধরণের রোগ দেখা যায়। তাতে মুরগির মড়ক হয়ে থাকে। তবে মাধাইপুর এলাকায় বয়লারের মড়কের ঘটনাটি জানার পরই সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ব্লক কর্তাদের ওই এলাকায় পাঠানো হয়েছে। মৃত মুরগির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।”
মাধাইপুর গ্রামের একটি আমবাগানে রয়েছে ওই পোলট্রি ফার্ম। এদিন সকালে ওই ফার্মে কর্মরত শ্রমিকরা এসে দেখেন, সারি সারি বয়লার মুরগি মরে পড়ে রয়েছে। তা জানার পরই তড়িঘড়ি বস্তাবন্দি করে মৃত বয়লারগুলিকে মাটিতে পুঁতে ফেলার ব্যবস্থা করা হয়। ওই ফার্মের মালিক শাহজাহান আলি বলেন, “এদিন সকালে এসে দেখি ফার্মের মধ্যে অসংখ্য বয়লার মরে পড়ে রয়েছে। অনেক বয়লার মুরগি ঝিমোচ্ছে। তারপর ফার্মের কর্মীদের ডেকে মৃত বয়লারগুলি বস্তাবন্দি করে ফাঁকা জায়গায় গর্ত করে পুঁতে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।” ফার্মের এক কর্মী আজাম শেখ দাবি করেন, এই ফার্মে দু’হাজার বয়লার মুরগির চাষ করা হচ্ছে। তার মধ্যে ২৫০টি বয়লারের মৃত্যু হয়েছে। আচমকা বয়লারের মোড়ক নিয়ে কি রহস্য জড়িয়ে রয়েছে তা অবশ্য খোলসা করে জানায়নি কর্তৃপক্ষ। ওল্ড মালদহের বিডিও ইরফান হাবিব বলেন, “মাধাইপুর গ্রামের বয়লারে মড়ক সম্পর্কে কিছু জানা ছিল না। বিষয়টি জানার পরই ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে কর্মীদের পাঠিয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। এর সঙ্গে করোনা আতঙ্কের কোনও সম্পর্ক নেই।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.