ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: বিশ্বভারতীর (Visva-Bharati University) আঙিনায় আবার রাজনীতি টেনে আনলেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। শনিবার তাঁর খোলা চিঠিতে তিনি জানিয়ে দিলেন, রাজনৈতিক কর্তাদের দ্বারা উৎসাহিত হয়ে এবং তাঁদের নেতৃত্বে এই ভাঙচুর-লুটতরাজ। কতিপয় মানুষের নির্দেশে পেশি শক্তির প্রকাশ ও প্রয়োগ। ১৭ই আগস্ট সমস্ত ভণ্ডদের জন্য ছিল একটি লাল-পত্র দিবস। এদিকে পৌষ মেলা মাঠে পাঁচিল তোলা এবং উপাচার্যের কাজকর্মের তীব্র নিন্দা করলেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। তিনি বলেন বর্তমান উপাচার্য যে ভাবে কাজকর্ম পরিচালনা করছেন তাতে উনি যেন কোনও রাজনৈতিক নেতা বা মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর। আদালতের আদেশকে ভুলভাবে প্রকাশ করে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ মেলার মাঠে পাঁচিল তুলছিল। এর ফলে পাঁচিল তোলা নিয়ে আবার নতুন করে বিতর্ক দেখা দিল।
এদিন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী তাঁর খোলা চিঠিতে উল্ল্যেখ করেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং তাঁর শান্তিনিকেতনের প্রতি ভালবাসা প্রদর্শনের নামে দুর্বৃত্তরা ভাঙচুর লুটতরাজে মত্ত হয়েছিল। তিন ঘন্টার মধ্যে গুরুদেবের গর্ব ও তাঁর প্রিয় বিশ্বভারতীর সাংকেতিক কাঠামোকে ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে। তিনি বলেছেন, বিশ্বভারতীর ঐতিহ্যের বিপরীতে বেড়া/প্রাচীর/দেওয়াল নির্মাণের অভিযোগ একবারে ভিত্তিহীন। বিশ্বভারতীর অখণ্ডতা, পবিত্রতা মুল্যবান জিনিসের নিরাপত্তা, জুয়া খেলা, মদ্যপান করা, পতিতাবৃত্তি-সহ যৌন ক্রিয়াকলাপ রোধে সীমারেখা নির্মানের অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে। গুরুদেব বেঁচে থাকাকালীন শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার জন্য চিনা ভবনটি একটি প্রাচীর দ্বারা ঘেরা হয়ে ছিল। একইভাবে পুরনো মেলার মাঠ, আশ্রম মাঠ, বিনয় ভবন, শ্রীনিকেতন মাঠ ঘেরা হয়ে ছিল। মেলার মাঠ চার ফুট পাঁচিল এবং তিন ফুটের কাঁটা তার দিয়ে ঘেরা হবে। কোনও ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর বিশেষ স্বার্থ এবং দুর্বৃত্তদের কোনও হুমকি কোনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এই অধিকার প্রয়োগ থেকে বিরত রাখতে পারে না।
এদিকে, বোলপুরে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করে পরিবেশ কর্মী সুভাষ দত্ত বলেন, পরিবেশ আদালতে বিশ্বভারতী প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে তারা মেলা প্রাঙ্গনের সীমানা নির্ধারণ ও ব্যারিকেড করবে। তার অর্থ এই নয় যে, মেলা প্রাঙ্গনে ইটের প্রাচীর দিয়ে ঘিরতে বলা হয়েছে। কলকাতার বইমেলা এবং খোলা জায়গায় অন্যান্য যে মেলা হয় তা অস্থায়ীভাবে টিন দিয়ে ঘেরা হয়ে থাকে। আমি এটাই আদালতে সওয়াল করেছিলাম এবং কর্তৃপক্ষ তাতে অঙ্গীকার করেছে মাত্র। তিনি বলেন, “বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ বীরভূম জেলা প্রশাসনকে জানিয়ে দিয়েছে, তারা আর পৌষমেলা করবে না। তাই মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছি পৌষমেলা এবং বসন্ত উৎসব রাজ্য সরকারের তত্ত্বাবধানেই অনুষ্ঠিত হোক।” এদিকে, বোলপুরের বকুলতলাতে নাগরিক কনভেনশনে বহু মানুষ পাঁচিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.