ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: পৌষ মেলা নিয়ে চূড়ান্ত দোটানায় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। আগামী ২৩ অক্টোবর গ্রিনবেঞ্চ আদালত যদি জরিমানা করে তাহলে মেলা করা নিয়ে পিছিয়ে আসতে পারে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। আবার বিধিনিষেধ অরোপ করলে তা কতটা মানতে পারবে তার উপর নির্ভর করবে মেলার ভবিষ্যৎ। কিন্তু এর মধ্যে মেলা নিয়ে শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট এবং কর্মীমণ্ডলীর প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে মেলা মাঠের জমি বুকিং থেকে পুরোটাই হবে অনলাইনে এবং মেলা পরিচালনা করবে কর্মীমণ্ডলী। আগামী ১৮ অক্টোবর মেলা পরিচালনার জন্য কমিটি গঠন করতে পারে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এদিকে এ বিষয়ে পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত জানিয়ে দিয়েছেন, আদালত কখনওই মেলা বন্ধ করতে বলেনি। বিশ্বভারতীকে নির্দেশ দিয়েছে পৌষ মেলাকে পরিবেশবান্ধব করতে হবে। মেলা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ২৩ ডিসেম্বর পৌষমেলা শুরু হবে শান্তিনিকেতনে। কিন্তু মেলা নিয়ে আদালতের রায়ের দিকে তাকিয়ে রয়েছে বিশ্বভারতী। এর মধ্যে গত ১ অক্টোবর বিশ্বভারতী আধিকারিকদের পাশাপাশি, শান্তনিকেতন ট্রাস্ট এবং কর্মীমণ্ডলীর প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকে বসেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। সেখানে পৌষমেলা হবে কি না তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে, এবার মেলায় স্টল করার জন্য জায়গার আবেদন, টাকা জমা দেওয়া, জায়গার বিতরণ-সহ একাধিক বিষয় পুরোটাই অনলাইনে করা হবে। এর ফলে দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে মেলাতে জায়গা দেওয়াকে কেন্দ্র করে যে দুর্নীতি এবং লক্ষ লক্ষ টাকার যে বেআইনি ব্যবসা হয়, তা বন্ধ হবে বলেই মনে করছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। একইভাবে ১২০০ স্টলের জায়গায় টাকা নিয়ে ১৫০০ স্টল বসানোর যে অভিযোগ থাকে তাও বন্ধ হবে। এবার মেলা পরিচালনা করবে কর্মীমণ্ডলী। প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে এবং ২০১৮ সালের পৌষমেলা নিয়ে মামলা করেন পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত। সেখানে তিনি অভিযোগ করেন পৌষমেলা পরিবেশবান্ধব নয়।
গত ৪ঠা জুন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছিল পৌষমেলা তারা পরিচালনা করবে না। কিন্তু ৭-৯ই পৌষ উপাসনা, পরলোকগত আশ্রমিকদের স্মরণ, মহর্ষি স্মারক বক্তৃতা, প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন, সমাবর্তন এবং খ্রিস্টোৎসব অনুষ্ঠানগুলি পালিত হবে। এই বিষয়ে শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের অন্যতম সদস্য অনিল কোনার বলেন, “গ্রিনবেঞ্চ কী রায় দেয় তার উপর সবকিছু নির্ভর করছে। পৌষমেলা নিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে আমরা বৈঠকে বসেছিলাম, বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।” বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার বলেন, “১৪ তারিখ বিশ্বভারতী খুলবে। তার আগে কিছু বলতে পারব না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.