সৌরভ মাজি, বর্ধমান: মেসের মধ্যে ইলেকট্রিক্যাল ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল নদিয়ার কল্যাণীতে৷ পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ছাত্রীর নাম গ্লোরিয়া রেজা ওরফে টিনা। ছাত্রীর বাবা সুপ্রিয় রেজার অভিযোগ, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার চৌদ্দচুল্লি গ্রামের বাসিন্দা টিনার মৃত্যুর জন্য দায়ী এক সহপাঠী যুবক। শনিবার অভিযুক্তর উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানিয়ে কল্যাণী থানায় অভিযোগ দায়ের করে মৃত ছাত্রীর পরিবার৷
রেজা পরিবার সূত্রে খবর, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে তাঁরই এক সহপাঠী। তারপর ঘনিষ্ঠতার ছবি-তথ্য ফাঁস করার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠতে থাকে সহপাঠীর বিরুদ্ধে৷ টিনাকে দিনের পর দিন ব্ল্যাকমেল করা হত বলেও অভিযোগ৷ ব্ল্যাকমেল করে টাকার দাবি করা হত বলেও অভিযোগ৷ আর এই ঘটনার জেরেই আত্মঘাতী হয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরের ওই ছাত্রী, অভিযোগ পরিবারের৷
অভিযুক্ত টিনার সহপাঠী আরও কয়েকজন ছাত্রীর সঙ্গে একইভাবে সম্পর্ক গড়ে তুলে ব্ল্যাকমেল করে টাকা আদায় করত বলেও পুলিশে অভিযোগ করেছেন সুপ্রিয়বাবু। কল্যাণী থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। অভিযুক্ত যুবকের মোবাইল নম্বর, ফেসবুক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত তথ্য পুলিশকে দেওয়া হয়েছে৷ এই সব পরীক্ষা করলেই, অভিযুক্ত পড়ুয়ার কারসাজি ধরা পড়বে বলে তিনি জানিয়েছেন।
এদিকে, টিনার একটি সুইসাইড নোট মিলেছে বলে জানিয়েছেন কন্যা হারা পিতা। সেই নোটে টিনা লিখেছেন, ‘আমি আর পারছি না। এমনভাবে কোনও মানুষ বাঁচতে পারে না। আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী পুষ্পেন্দু সাহু।’ পুলিশ পুষ্পেন্দুর খোঁজ শুরু করেছে বলে জানা গিয়েছে। পুষ্পেন্দুর মোবাইল নম্বর যা সুপ্রিয়বাবু পুলিশকে দিয়েছেন, তাতে বহুবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি৷
সুপ্রিয়বাবু পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন, পুষ্পেন্দু তাঁর মেয়েকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সম্পর্ক গড়েছিল। বিষয়টি টিনা তাঁদের জানানও। এই সম্পর্কে আপত্তি করেছিলেন টিনার মা। কিন্তু পুষ্পেন্দুর বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় তিনি তা মেনেও নেন। সম্প্রতি টিনা খুবই আতঙ্কের মধ্যে ছিলেন। তা বুঝতে পেরেছিলেন টিনার মা। তিনি মেয়েকে জিজ্ঞাসা করলে টিনা তাঁকে জানান তিনি খুব ভয় পাচ্ছেন। কিন্তু কেন তা খোলসা করে জানাননি। দিন চারেক আগে তাঁরা খবর পান তাঁর মেয়ে অসুস্থ হয়ে কল্যাণীতে হাসপাতালে ভর্তি। তাঁরা সেখানে গিয়ে দেখেন তাঁর মেয়ে মারা গিয়েছেন। তারপর তাঁরা খোঁজ নিয়ে পুষ্পেন্দুর বিষয়ে সব কিছু জানতে পারেন। ঘটনার পর থেকেই পুষ্পেন্দু কল্যাণী ছেড়ে পালিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই বিষয়ে বৃহস্পতিবার কল্যাণী থানায় পুষ্পেন্দুর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন সুপ্রিয়বাবু৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.