সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ্য রাজনীতিতে এই মুহূর্তে সবথেকে বিতর্কিত ও চর্চিত নাম নিঃসন্দেহে মুকুল রায়। দীর্ঘদিনের টানাপোড়েন অন্তে দল ছেড়েছেন। এখন তিনি নতুন দল গড়বেন নাকি, বিজেপিতে যোগ দেবেন, এই হল লক্ষ টাকার প্রশ্ন। কী উত্তর মিলছে সে প্রশ্নের?
[ লুকোচুরি খেলায় ইতি, অবশেষে পুলিশের জালে হানিপ্রীত ]
রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা বিজেপিতেই যোগ দিচ্ছেন মুকুল। যদিও তাঁর মুখ থেকে এরকম কোনও কথা শোনা যায়নি। কোনও কোনও মহলের বক্তব্য, ঘনিষ্ঠ মহলে সে ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন পোড় খাওয়া এই প্রাক্তন তৃণমূলী। এবং কেন তিনি স্বভাব বিরোধিতা ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেবেন, তার ব্যখ্যাও নাকি তৈরি। কিন্তু এখনও তিনি নিজে এ বিষয়ে একটি শব্দও খরচ করেননি। তবে এমন কিছু ইঙ্গিত মিলছে যাতে মুকুলের সঙ্গে বিজেপি যোগের রেখা ক্রমশ যেন স্পষ্ট হচ্ছে। এ অভিযোগ আগেও ছিল। বস্তুত এই অভিযোগের পরই তাঁর উপর নজরদারি চালায় তৃণমূল। শেষমেশ তিনি দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলে, তৃণমূল তাঁকে ছয় বছরের জন্য সাসপেন্ড করে। কিন্তু সাংগঠনিক ক্ষমতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরই তৃণমূলে যদি কারও নাম নেওয়া হয়, তবে তিনি মুকুল রায়। তাই মুকুলের সঙ্গে কোন কোন নেতা যোগ রাখছেন, তা তূণমূলের কাছে বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। জানা যাচ্ছে, প্রাক্তন দলের বহু তৃণমূল সারির নেতার সঙ্গেই যোগাযোগ করেছেন মুকুল। এখন প্রশ্ন, এই সমর্থন নিয়ে তিনি নতুন দল গড়বেন নাকি বিজেপিতেই যোগ দেবেন?
[ দেশপ্রেমের কোনও ‘এক্সপায়ারি ডেট’ হয় না, সাফ কথা গম্ভীরের ]
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞের মতে, নতুন দল গড়ে ব্র্যান্ড মমতাকে পরাস্ত করা একরকম অলীক স্বপ্ন। অন্যদিকে, বিজেপিতে যোগ দিলে তাঁকে বড়সড় কোনও পদ দেওয়া হতে পারে। সেক্ষেত্রে খানিকটা তৈরি জমিতেই খেল দেখাতে পারেন মুকুল। কিন্তু এক্ষেত্রেও বিপদের গেরো আছে দুপক্ষেরই। প্রথমত, মুকুল বরাবর বিজেপি সাম্প্রদায়িক নীতির কট্টর বিরোধিতা করেছেন। এই সেদিনও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে বসে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন বিজেপির বিরুদ্ধে। আজ তিনি সেই দলে যোগ দিলে, গোড়াতেই সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে হবে। নয়তো ব্যক্তিগত আখের গোছানোর অভিযোগ গোড়াতেই সমর্থন হারাবেন। অন্যদিকে, মুকুলকে দলে নেওয়ার ক্ষেত্রে বিজেপিরও বিপদ আছে। সেক্ষেত্রে তৃণমূলের বিরুদ্ধে নারদ হাতিয়ার ভোঁতা হবে বিজেপির। তাই রাজনৈতিক চালের ক্ষেত্রে দুই পক্ষই বেশ সাবধানী। এ মধ্যেই বিজেপির সাংগঠনিক বৈঠককে মুকুলকে নিয়ে একপ্রস্থ আলোচনা হয় বলেই সূত্রের খবর। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় জানাচ্ছেন, মুকুলের বিষয়টির উপর নজর রাখছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। উপরন্তু কলকাতায় আরএসএস প্রধানের সঙ্গেও দেখা করার কথা আছে মুকুলের। এই সব মিলিয়েই মুকুল-বিজেপি ঘনিষ্ঠতার তত্ত্বটি ক্রমশ জোরালো হচ্ছে। পাশাপাশি এবছর বিজয়ায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে মিষ্টিও পাঠিয়েছেন মুকুল। তাঁর মুখে দিলীপবাবুর বেশ সুখ্যাতি শোনা গিয়েছে বলেও খবর। তাহলে কি বিজয়ার মিষ্টিতেই লেখা ছিল দলে যোগ দেওয়ার সন্দেশ? তার উত্তরের জন্য অবশ্য আর একটু অপেক্ষা করতেই হবে। লক্ষ্মীপুজোতেই জানা যাবে বিজেপির লক্ষীলাভ হল কিনা।
[ কাশ্মীরে জেহাদের জাল, জড়িত রোহিঙ্গাদের একাংশ: রিপোর্ট ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.