সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: সাতসকালে প্রাতঃকৃত্য করতে গিয়ে সাক্ষাৎ মৃত্যুমুখে বৃদ্ধ। পুরুলিয়ার (Purulia) বাঘমুন্ডি ব্লকের মাঠা রেঞ্জের কুদনা বিটের অন্তর্গত টিকরটাঁড় গ্রামে বুনো হাতির (Elephant) হামলায় মৃত্যু হল তাঁর। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম ধুমনাথ সরেন। তাঁর বয়স ৭৫ বছর। বাড়ি বাঘমুন্ডি অঞ্চলের টিকরটাঁড় গ্রামে। সোমবার সাতসকালে বাড়ির অদূরে প্রাতঃকৃত্য করতে গিয়েছিলেন তিনি। বুনো হাতির সামনে পড়ে যান। মাথায় গুরুতর চোট পান। তাঁকে পাথরডি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসার পর পুরুলিয়ায় রেফার করেন চিকিৎসকরা। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু (Death) হয় ধুমনাথ সরেনের।
সপ্তাহ খানেক ধরে পুরুলিয়া ও কংসাবতী দক্ষিণ বন বিভাগে একাধিক হাতি দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল। এরা সকলেই হাজারিবাগ ও দলমা থেকে আসা। সোমবারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পুরুলিয়ায় মোট ১৯ টি হাতি রয়েছে। আমন ধানের লোভে এরা এই বনাঞ্চলে নেমে আসে। এরাই বাঘমুন্ডির মাঠা বনাঞ্চলে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে, ক্ষতি করছে ফসলেরও। বনদপ্তরের তরফেও জনসচেতনতায় ধারাবাহিকভাবে মাইক নিয়ে প্রচার করা হচ্ছে। ঘন জঙ্গলে যাতে মানুষজন না যান, তার জন্য বার বার বলা হচ্ছে। কিন্তু তারই মধ্যে সোমবার ঘটে গেল ধুমনাথ সরেনের মৃত্যু। পুরুলিয়া বনবিভাগের ডিএফও (DFO) কার্তিকায়েন এম বলেন, “দুঃখজনক ঘটনা। হাতির হামলায় জখম হওয়ার পর পুরুলিয়া নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় বৃদ্ধের। বিধি মোতাবেক ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে।”
বনদপ্তর সূত্রে খবর, কংসাবতী দক্ষিণ বনবিভাগের বান্দোয়ান ব্লকের ঝাড়খণ্ড সীমানায় ২৬ টি হাতি ছিল। বান্দোয়ান ১ বনাঞ্চলের সীমানায় ১২টি, বান্দোয়ান ২ বনাঞ্চলের সীমানায় ৬টি, যমুনা বনাঞ্চলের সীমানায় ১২টি। এই হাতিগুলি অবশ্য এখন ঝাড়খণ্ডের দিকে চলে গিয়েছে। তবে সেখান থেকেই কংসাবতী দক্ষিণ বনবিভাগে দাপাদাপি করে বেড়াচ্ছে গজরাজের দল। প্রতি বছরই এরা দলমা, হাজারিবাগ থেকে আসে। তবে স্থায়ীভাবেও কয়েকটি হাতি পুরুলিয়া বনবিভাগের একাধিক বনাঞ্চলে থেকে যায়। তারাই মাঝেমধ্যে লোকালয়ে ঢুকে প্রাণহানির কারণ ঘটায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.