সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: গ্রামাঞ্চলের সীমানা পেরিয়ে শহরে ঢুকে এবার ঘাতক হয়ে উঠল উন্মত্ত হাতি। বুধবার রাতে শ্মশান থেকে ফেরার সময় এক ব্যক্তি গজরাজের সামনে পড়ায় তাঁকে শুঁড়ে তুলে আছাড় মারে হাতিটি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। অন্যদিকে, ঝাড়গ্রাম থানা এলাকার নুনিয়াকুন্দড়ি গ্রামে রাতে আগুন পোহানোর সময় হাতির হানায় মৃত্যু হয়েছে আরেকজনের। শহরেও হাতি ঢুকে মানুষ মেরে ফেলার ঘটনা সাম্প্রতিককালের মধ্যে এই প্রথম। এতে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন শহরবাসী। ঝাড়গ্রামের ডিএফও বাসবরাজ হোলেইচ্ছি তাঁদের আশ্বস্ত করে জানিয়েছেন, হাতিটিকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুরের জঙ্গলমহল মানেই যখনতখন বন্যপ্রাণীর হামলার আতঙ্ক। জঙ্গলের ঘেরাটোপ পেরিয়ে বাঘ, হাতির লোকালয়ে আগমন নতুন কিছু নয় এখানকার বাসিন্দাদের কাছে। হাতির উৎপাতে জমি ফসল কিংবা ঘরবাড়ি তছনছ করার সঙ্গেও তাঁরা অনেকটাই অভ্যস্ত। তবে উন্মত্ত হাতির এলোপাথাড়ি ছুটোছুটি কিংবা শুঁড়ে তুলে আছাড় মারার ঘটনা এখনও ত্রাসের জঙ্গল লাগোয়া এলাকার বাসিন্দাদের কাছে। সম্প্রতি ঝাড়গ্রামের এসব বনাঞ্চলে গজরাজের দাপট বেড়েছে। প্রায়শয়ই জাতীয় সড়কে উঠে এসেছে হাতি। আটকে গিয়েছে যানচলাচল। বনাঞ্চলের সীমানা পেরিয়ে হাতি শহরে ঢুকে তাণ্ডব চালিয়েছে, এমন ঘটনাও ঘটছে ইদানিং। পুজোর সময়েই তো শহরে ঢুকে প্যান্ডেল তছনছ করে দিয়েছিল এক গজরাজ।
কিন্তু এবার একেবারে শহরের ভিতরে ঢুকে এক ব্যক্তিকে শুঁড়ে তুলে আছাড় মেরে ঘাতক হয়ে উঠল দাঁতাল, তাতে স্তম্ভিত শহরবাসী। সাম্প্রতিককালে এমন অভিজ্ঞতা তাঁদের প্রথম। বুধবার রাতে ঝাড়গ্রাম শহরের বামদা এলাকার মেহেরবাঁধ শ্মশান থেকে ফেরার পথে হাতির সামনে পড়ে যান সুভাষ মাহাতো নামে বছর চল্লিশের এক ব্যক্তি। তাঁকে শুঁড়ে তুলে আছাড় মেরে ফেলে দেয় উন্মত্ত হাতিটি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
পুলিশ ও বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, মনোরঞ্জন মাহাতো নামে আরেক ব্যক্তি নুনিয়াকুন্দড়ি গ্রামে রাতে আগুন পোহাচ্ছিলেন। সেসময় একটি পূ্র্ণবয়স্ক হাতি পিছন থেকে এসে আক্রমণ করে আছাড় মারে। তাঁরও মৃত্যু হয়। ঝাড়গ্রামের ডিএফও বাসবরাজ হলেইচ্ছির আশ্বাস, “মৃ্ত্যুর দুটি ঘটনার ক্ষেত্রেই নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।” তবে ক্ষতিপূরণই তো সব নয়, শহরাঞ্চলেও হাতি যেভাবে দাপট দেখাচ্ছে, তাতে চিন্তার ভাঁজ ক্রমশ চওড়া হচ্ছে সাধারণ মানুষের কপালে।
ছবি: প্রতীম মৈত্র।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.