অরূপ বসাক, মালবাজার: খাবারের খোঁজে লোকালয়ে হানা দিয়ে ঘরদোর ভাঙচুর নতুন কিছু নয়। এমনকী রেশন দোকান ও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রেও হানা দিয়েছে গরুমারা জঙ্গলের দলছুট দাঁতাল। তাই বলে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে!
মঙ্গলবার রাতে তেমনই ঘটনা ঘটল ডুয়ার্সের মেটেলি ব্লকের বড়দিঘি চা বাগান এলাকায়। বুনো হাতিটি কিছুদিন ধরেই তক্কেতক্কে ছিল। অবশেষে সুযোগ পেয়ে এদিন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের হেঁশেলে হানা দেয়। দেওয়াল ভেঙে রোগীদের জন্য রাখা চাল, ডাল, ছোলা-সহ রকমারি সবজি খেয়ে সাবাড় করে। ঘটনার পর বাগান জুড়ে ফের নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
[ সীমান্তের কাঁটাতার পেরিয়ে শিলিগুড়িতে হাজির চার বাংলাদেশি যুবক! ]
চা-বাগানের অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার বিশ্বডেডং চুবা বলেন, “এতদিন হাতি চা বাগানের শ্রমিক বস্তিতে ভাঙচুর চালিয়েছে। এবার হাসপাতালে চড়াও হয়েছে। খুবই চিন্তায় আছি।” বনকর্তারা জানিয়েছেন, পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হয়েছে। খুনিয়ার রেঞ্জার সরোদমুনি সুব্বা বলেন, “একটি হাতি গোলমাল করছে। খুব মারমুখী হয়েছে। হাতিটির গতিবিধির উপরে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।” চা-বাগানের শ্রমিকরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাত এগারোটা নাগাদ লাটাগুড়ি জঙ্গল থেকে বের হয়ে বুনোটি লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। মাঠে ধান না পেয়ে এদিক ওদিক ছোটাছুটি করতে শুরু করে। এক সময় পৌঁছে যায় চা-বাগানে। শুঁড় তুলে সেখানকার স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জানালার গ্রিল ধরে টানাহ্যাঁচড়াও করে। কিন্তু জানালা খুলছে না দেখে পিছন ঘুরে ধাক্কা দিয়ে গোটা দেওয়াল ধসিয়ে দেয়। এরপর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের হেঁশেলে ঢুকে পড়ে। চা-বাগান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগী ছিল না। তাই দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়েছে।
তবে এই প্রথম হাতির হানা নয়। এক সপ্তাহ আগেও হাতি ঢুকে পড়ে চা-বাগানে। ভেঙে দেয় পানীয় জল সরবরাহের পাইপ লাইন। মঙ্গলবার রাতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হামলা চালানোর পর বুনোটি বাগানের রাঙামাটি লাইনে ঢুকে পড়ে। সেখানে একটি শিশু শিক্ষাকেন্দ্র ও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে তাণ্ডব চালায়। সেখানেও ঘরের জানালা ভেঙে মজুত চাল, ডাল সাবাড় করে। নষ্ট করে বাসনপত্র। বাগানের গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য রোহিত মাহালি বলেন, “বাগানে ফের হাতির আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। বনদপ্তরকে ঘটনার কথা জানানো হয়েছে।” এদিকে মঙ্গলবার বাগানে বনদপ্তরের বসানো খাঁচায় ধরা পড়েছে চিতা বাঘ।
[ দেগঙ্গার পচা মাংসের কারবারের সাপ্লাই লাইন কি উলুবেড়িয়ার গরুর হাট? ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.