সম্যক খান, মেদিনীপুর: হাতির মৃত্যু ঘিরে সাতসকালেই চাঞ্চল্য ছড়াল পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতায়। মৃত হাতিটি পূর্ণবয়স্ক এবং দলমার সদস্য বলে জানা গিয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে আমলাগোড়া রেঞ্জের মাগুরাশোল মৌজা এলাকার একটি হিমঘরের পিছনে হাতিটিকে পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বনদপ্তরে খবর দেওয়া হলে, আধিকারিকরা ছুটে যান ঘটনাস্থলে। তাঁদের প্রাথমিক অনুমান, বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে হাতিটির। তবে ময়নাতদন্তের পূর্ণ রিপোর্ট পাওয়ার পরই স্পষ্ট হবে মৃত্যুর আসল কারণ।
বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সপ্তাহে দলমা থেকে ৬০টি হাতির একটি দল ঢুকেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের বনাঞ্চলে। শালবনি, গোয়ালতোড়, গড়বেতা অঞ্চলেই রয়েছে তারা। ওই অঞ্চলই আপাতত তাদের বিচরণ ক্ষেত্র। তাদেরই মধ্যে থেকে একজন সদস্যকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। তবে মৃত দাঁতালের গায়ে কোনও ক্ষতচিহ্ন ছিল না বলেই জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। বন দপ্তরের আধিকারিকদের অনুমান, রাতের আঁধারে সম্ভবত দলছুট হয়ে গিয়েছিল হাতিটি। লোকালয়ের দিকে ঢুকে এমন কিছু খাবার খেয়ে ফেলেছে, যার জেরেই মৃত্যু হয়েছে তার। সকালে হাতির দেহ ঘিরে ভিড় জমান গ্রামবাসীরা। অনেকে হাতিটিকে ছুঁয়ে প্রণামও করেন। জঙ্গলমহলের এই এলাকায় হাতিকে দেবজ্ঞানে পুজো করেন অনেকে। সেই সংস্কার থেকেই এই মৃত হাতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান। বেলার দিকে মৃতদেহ উদ্ধার করে বনকর্মীরা ময়নাতদন্তে পাঠানোর প্রস্তুতি নেন।
গত মাসের শেষ সপ্তাহে ঝাড়গ্রামের বিনপুরে কাঁকো এলাকায় হাতি তাড়ানো অভিযান চলাকালীন হাইটেনশন তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় ৩টি হাতির। তাদের মধ্যে একটি হাতি ছিল অন্তঃসত্ত্বা। তা নিয়ে বেশ শোরগোল পড়ে গিয়েছিল এলাকায়। বিদ্যুৎ দপ্তর এবং বনদপ্তরের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে এমন ঘটনা বলে অভিযোগ তুলে গ্রামবাসীরা বিক্ষোভ দেখান। পরে নিয়ম মেনে গ্রামবাসীরা তাদের শ্রাদ্ধ করেন। এনিয়ে সাম্প্রতিককালে পশ্চিম মেদিনীপুর রেঞ্জে বেশ কয়েকটি হাতির মৃত্যুর খবর মিলেছে। খাবারের অভাবে লোকালয়ে ঢুকে পড়ার ফলেই এমন ঘটনা ঘটছে বলে মনে করছে বন্যপ্রাণপ্রেমীদের একাংশ। হাতির মৃত্যু আটকাতে বনদপ্তর একাধিক কর্মসূচি নিচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.