সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: নদী পেরতে গিয়ে মৃত্যু হল মাত্র মাস দুয়েকের হস্তিশাবকের। ঝাড়গ্রামের নয়াগ্রাম থানা এলাকার চাঁদাবিলা রেঞ্জে উদ্ধার হওয়া শাবকটির দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে বনকর্মীদের অনুমান, জলে ডুবেই মৃত্যু হয়েছে দু মাসের শাবকটির। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
শুক্রবার গভীর রাতে দলমা পাহাড় থেকে অন্তত ৫০টি হাতির একটি দল সূবর্ণরেখা নদী পেরিয়ে ঝাড়গ্রামের চাঁদাবিলা রেঞ্জের জঙ্গলে প্রবেশ করে। ছড়িয়েছিটিয়ে যায় জঙ্গলের বিভিন্ন অংশে। মনে করা হচ্ছে, ওই দলেই ছিল মাস দুয়েকের পুরুষ শাবকটি। এই সময়ে সূবর্ণরেখা নদীটি একেবারে জলে পরিপূর্ণ। স্রোতও রয়েছে। বনদপ্তরের কর্মীদের প্রাথমিক অনুমান, সেই ভরা নদী পেরতে গিয়েই হস্তিশাবকটি জলে ডুবে যায়। বড় হাতিগুলি তাকে টেনে তোলার চেষ্টা করে। কিন্তু স্রোতের টানে তা সম্ভব হয়নি। এরপর বড় হাতিরা নদী পেরিয়ে জঙ্গলে ঢুকে যায়।
আজ সকালেই চাঁদাবিলা রেঞ্জের দেউলবাড়ে সূবর্ণরেখার পাড়েই ছোট হাতিটির দেহ দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। গায়ে বালি ভরতি ছিল। তা দেখেই তাঁদের অনুমান, নদীর জলে ডুবে যাওয়ার পর পাড়ে ভেসে এসেছে দেহটি। তাঁরাই খবর দেন বনদপ্তরে। বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ছোট হাতিটির দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠান। খড়গপুর বিভাগের ডিএফও অরূপ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘গতকাল রাতেই দলমা থেকে হাতির একটি বড়সড় দল এখানে ঢুকেছে। সেখানেই ছিল ছোট হাতিটি। ওর গায়ে আঘাতের কোনও চিহ্ন নেই। তাই মনে করা হচ্ছে, জলে ডুবে তার মৃত্যু হয়েছে।’
এর আগে ঝাড়গ্রামে হাতি তাড়ানোর সময় হাইটেনশন তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছিল এক গর্ভবতী হস্তিনী-সহ ৩টি হাতির। তাতে বনকর্মীদের দায়িত্ববোধ নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল। এমন মর্মান্তিক ঘটনা গ্রামবাসীরাও ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। ঝাড়গ্রামে বারবার কোনও না কোনও হাতি মৃত্যু, জঙ্গল থেকে লোকালয়ে বেরিয়ে এসে দাঁতালের তাণ্ডবের লাগাতার ঘটনায় ঝাড়গ্রামীর জীবনে সমস্যা তো বাড়ছেই। সেইসঙ্গে জঙ্গলে হাতিদের নিরাপত্তাও অনিশ্চয়তার মুখে।
ছবি: প্রতীম মৈত্র।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.