শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: হাতির হানায় বাড়িঘর ভাঙচুর, ফসল নষ্টের খবর তো আকছার শোনা যায়। এমনকী গজরাজের রোষে মৃত্যুর খবরও নতুন নয়। কিন্ত খাবারের খোঁজে এসে আধার কার্ড এমনকী ব্যাংকের পাসবই খেয়ে ফেলল গজরাজ। এমন খবর তো রোজ-রোজ মেলে না। বরং কথাটা শুনে মনে হতেই পারে গল্পের গরু গাছে উঠেছে। কিন্তু এ ঘটনা ১০০ শতাংশ সত্যি। জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ ব্লকের বৈকুণ্ঠপুর জঙ্গল লাগোয়া শিমূলগড়ুই গ্রামের ঘটনা। এমন অবাক করা ঘটনার কথা সামনে আসতেই হইহই পড়ে গিয়েছে। কীভাবে সেই কাগজপত্র ফেরত পাবেন, তা ভেবে ঘুম উড়েছে কার্ড মালিকের।
জঙ্গল ছেড়ে খাবারের খোঁজে মাঝেমধ্যেই লোকালয়ে হানা দেয় গজরাজ। কখনও রাত বিরেতে মাটির বাড়িতে হামলা চালায়। আবার কখনও চাষের মাঠে তাণ্ডব চালায় সে। শনিবার রাতেও তেমনই শিমূলগড়ুই গ্রামে চড়াও হয়েছিল গজরাজ। বছর পয়ষট্টির প্রৌঢ় ফির ওঁরাওয়ের বাড়িতে একটি হাতি হানা দেয়। শুঁড়ের আঘাতে কার্যত তছনছ করে দেয় মাটির বাড়ি। চারিদিকে ঘিরে রাখা বেড়াও ভেঙে দেওয়া হয়। ভেঙে ফেলা হয় বাড়ির অ্যাসবেসটসের চালও। ঘরের ভিতরের আসবাবও গুড়িয়ে দেয় গজরাজ।
বাড়ির মধ্যে একটি ড্রামে ১৫ কিলো চাল রাখা ছিল। শেষমেশ নতুন চালের গন্ধে সেই ড্রামে মুখ ডোবায় গজরাজ। মনের আনন্দে উদরপূর্তি সারে হাতিটি। ড্রামের সব চাল শেষ করে তবেই মুখ তোলে সে। এরপর খোশ মেজাজে দুলকি চালে জঙ্গলেও ফিরে যায়। হাতিটি ফিরে যেতেই চমক ভাঙে বাড়ির মালিক ফির ওঁরাওয়ের। ওই ড্রামের ভিতরেই তো আধার কার্ড, ব্যাংকের পাসবই রাখা ছিল। সেটাও কি তবে গজরাজের পেটের ভিতরে? তছনছ হয়ে যাওয়া ঘরের আনাচ-কানাচ খুঁজের পাসবই বা আধার কার্ডের হদিশ মেলেনি।
ফিরা ওঁরাও জানিয়েছেন, এই প্রথম নয়, এর আগে একাধিকবার তার বাড়িতে হাতি হানা দিয়েছে। বাড়ি তছনছ করে দিয়েছে। কোনওরকমে বাড়িটা ফের সারিয়ে তুলেছিলেন তিনি। কিন্তু হাতির তাণ্ডবে এবারও ভেঙে গেল তার স্বপ্নের ঘর। তবে তা নিয়ে ফিরার মাথাব্যথা নেই। বরং আধার-পাসবই কী করে ফিরে পাবেন, তা ভেবে মাথার চুল ছিঁড়ছেন তিনি। তবে এত জরুরি কাগজপত্র কেন চালের ড্রামে ছিল, সেই হিসেব মেলাতে পারছেন না গ্রামবাসীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.