শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: রাত পোহালেই শুরু হবে লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফা৷ দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি-সহ ভোট হবে রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রে৷ এবং সেখানে সুষ্ঠ ভাবে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে এক অভিনব পদক্ষেপ নিল নির্বাচন কমিশন৷ রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য আলাদা আলাদা ‘কালার কোডিং’ পদ্ধতি চালু করল কমিশন৷ যার ফলে বুধবার ভোটকর্মীরা ডিসিআরসি-তে অবস্থিত নির্দিষ্ট রঙের তাঁবুতে ঢুকে সহজেই নিজেদের সামগ্রী সংগ্রহ করতে পারলেন৷
[ আরও পড়ুন: ঝাঁটা মেরে বিদায় করুন কেন্দ্রীয় বাহিনীকে, কর্মীদের পরামর্শ তৃণমূল বিধায়কের ]
জানা গিয়েছে, এই উদ্দেশ্যে আগেই প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রের ভোট কর্মীদের আলাদা আলাদা রঙের অ্যাপয়েন্টমেন্ট স্লিপ দেওয়া হয়৷ সেই স্লিপের রঙ অনুযায়ী বুধবার নির্দিষ্ট রঙের তাঁবুতে যান ভোটকর্মীরা৷ এবং সেখান থেকে নিজেদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী তথা বেড রোল, ইভিএম মেশিন সংগ্রহ করেন তাঁরা৷ এবং ওই নির্দিষ্ট রঙের স্লিপ লাগানো গাড়িতে করেই বুধবার রওনা দেন ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে৷ জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত হেমতাবাদ বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে হালকা সবুজ রং৷ করমদিঘি বিধানসভা কেন্দ্রের নির্দিষ্ট করা হয়েছে নীল, কালিয়াগঞ্জের জন্য গোলাপি রং, রায়গঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য মাস্টার্ড রঙ, ইসলামপুরের জন্য সাদা, গোয়ালপোখরের জন্য হলুদ ও চাকুলিয়ার জন্য জলপাই রং৷ কেবল রায়গঞ্জই নয়, কমিশনের তরফে দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত চোপড়া বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য আকাশী রঙটি নির্দিষ্ট করা হয়েছে৷ নির্বাচন কমিশনের তরফে ভোটকর্মীদের যে বেড রোল দেওয়া হয়, সাধারণত তাতে থাকে মশারি, মাদুর, বেসিক মেডিসিন ও মশার ধূপ৷ এবার তাতে যুক্ত হয়েছে স্যানিটেশন সামগ্রী৷
[ আরও পড়ুন: বিজেপি করার অপরাধে দৃষ্টিহীন কৃষকের ফসল নষ্টের অভিযোগ, কাঠগড়ায় তৃণমূল ]
রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের জন্য মূলত দুটি ডিসিআরসি তৈরি করা হয়েছে৷ প্রথমটি রয়েছে রায়গঞ্জ পলিটেকনিকে৷ যেখান থেকে সামগ্রী সংগ্রহ করেন কালিয়াগঞ্জ, হেমতাবাদ, রায়গঞ্জ ও করণদিঘি বিধানসভার ভোটকর্মীরা৷ এবং দ্বিতীয় ডিসিআরসি তৈরি হয়েছে ইসলামপুর কলেজে৷ সেখান থেকে নির্বাচনী সামগ্রী সংগ্রহ করেন ইসলামপুর, গোয়ালপোখর ও চাকুলিয়ার ভোটকর্মীরা৷ এই বিষয়ে উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক তথা রিটার্নিং অফিসার অরবিন্দ কুমার মীনা বলেন, ‘‘গত নির্বাচনের মতোই এবারও আমরা ‘কালার কোডিং’ ব্যবস্থা চালু করেছি৷ এতে ভোটকর্মীরা খুব উপকৃত হয়েছিলেন৷ এবারও তা করা হয়েছে৷’’ সূত্রের খবর, ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনের সময় তৎকালীন জেলাশাসক স্মিতা পাণ্ডের নেতৃত্বে প্রথম এই ‘কালার কোডিং’ চালু হয়৷ ২০১৫-তে এর জন্য পুরস্কারও পায় উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রশাসন৷
প্রসঙ্গত, রায়গঞ্জ লোকসভা আসনে মোট বুথের সংখ্যা ১৬২৩টি৷ যার মধ্যে মডেল বুথ ২৭টি৷ মহিলা পরিচালিত বুথ ১৭টি৷ স্পর্শকাতর বুথ ৩২৭টি৷ বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে প্রতি বুথে থাকছেন চারজন করে ভোটকর্মী৷ রাখা হচ্ছে আরও ন’শো অতিরিক্ত ভোটকর্মী৷ রায়গঞ্জ আসনে মোট ভোটারের সংখ্যা ১৫ লক্ষ ৫৬ হাজার৷ তারমধ্যে পুরুষ ভোটার ৮ লক্ষ ৪১ হাজার৷ মহিলা ৭ লক্ষ ৬২ হাজার৷ এবং নতুন ভোটার দেড় লক্ষ৷ সুষ্ঠ ও অবাধ নির্বাচনের জন্য কমিশনের তরফে মোতায়েন করা হয়েছে ৬৪ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী৷ প্রায় আশি শতাংশ বুথেই থাকছে কেন্দ্রীয় বাহিনী৷ রাজ্যের সশস্ত্র পুলিশ থাকছে ২০ হাজার৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.