সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ডহারবার: ঘরের মধ্যে থেকে এক বৃদ্ধার আধপোড়া মৃতদেহ উদ্ধারকে ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়াল দক্ষিণ ২৪ পরগনার রবীন্দ্রনগর থানার রামদাসহাটির কাজিরডাঙা এলাকায়। অভিযোগ, বৃদ্ধাকে বাড়ির বাইরে কোথাও গায়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করার চেষ্টা হয়। তারপর দেহটি ঘরে এনে রাখা হয়। ঘটনায় ইতিমধ্যেই একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
মহেশতলার আকরায় নিজের বাড়ি বিক্রি করে কাজিরডাঙায় এসে একটি ভাড়াবাড়িতে ছেলে, ছেলের বউ ও বছর আঠারোর এক নাতনিকে নিয়ে থাকতেন বৃদ্ধা মিনারা বেওয়া (৫৮)। গৃহবধূ রোশনারা বিবি বাপেরবাড়ি থেকে মেয়েকে আনতে গিয়েছিলেন। তাঁর স্বামী নুরউদ্দিন মোল্লা কাজে বাড়ির বাইরে ছিলেন। ওই গৃহবধূ বাড়ি ফিরে দেখেন, তাঁর শ্বাশুড়ি ঘরের মধ্যে আধপোড়া অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। তাঁর দেহ জড়ানো রয়েছে কম্বলে। চোখের সামনে এমন দৃশ্য দেখে চিৎকার-চেঁচামেচি করে পাড়ার লোকজনকে ডাকেন গৃহবধূ। খবর দেওয়া হয় মহেশতলা থানায়। পুলিশ এসে বৃদ্ধার আধপোড়া মৃতদেহটি উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহটি মর্গে পাঠানো হয়।
পাড়ার বাসিন্দা ও মৃতার আত্মীয়দের অভিযোগ, বাড়ির বাইরে ওই মহিলাকে কোথাও আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে মৃতদেহটি ঘরের মধ্যে এনে রাখা হয়। কারণ দেহটি ঘর থেকে উদ্ধার করা হলেও ঘরের অন্যান্য আসবাবপত্র বা জামাকাপড়ে আগুন লাগেনি। মৃতার ননদ নওসারা বিবি আবার কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন গৃহবধূ রোশনারাকে। তাঁর অভিযোগ, এর আগেও একবার তাঁর বউদিকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছিলেন রোশনারা।
একই সুর প্রতিবেশী পলি শেখের গলাতেও। তিনি জানান, স্থানীয়রা ওই মহিলার ঘরের ভেজানো দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকে দেখেন, বৃদ্ধার সারা শরীরে ফোসকা পড়ে গিয়েছে। মাথার সমস্ত চুলও পুড়ে গিয়েছে। তাঁর অভিযোগ, আকরায় নিজের বাড়ি বিক্রির টাকা নিজের কাছেই রেখেছিলেন বৃদ্ধা। শ্বাশুড়ির কাছ থেকে অনেক চেষ্টা করেও সেই টাকা হাতাতে না পারায় তাঁকে পুড়িয়ে হত্যা করেছেন মৃতার রোশনারাই। পুলিশ জানিয়েছে, বৃদ্ধার এই রহস্যমৃত্যুর তদন্ত শুরু হয়েছে। বউমাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.