বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: না বলে একদিন বাড়ি থেকে বেড়িয়ে গিয়েছিলেন৷ কোনও খোঁজ মিলছিল না তাঁর৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের একটি পোস্টের দৌলতে খোঁজ মিলল মহিলার৷ আট দিন পর মাকে খুঁজে পেয়ে খুশি ছেলে৷ নির্বিকার ভারসাম্যহীন ওই মহিলা৷
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো অযথা গুজবের জেরে গণপিটুনির শিকার হচ্ছেন অনেকেই৷ কিন্তু নদিয়ার রানাঘাটের শ্যামনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের পান্থপাড়ার ছবি একেবারেই অন্যরকম৷ সুভাষ দাসের বাড়িতে এখন খুশির হাওয়া৷ তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের লোকজনকে তো বটেই৷ সুভাষ দাসের মায়ের নাম শ্যামলী দাস৷ বয়স ৬৫ বছর৷ শ্যামলী দাস মানসিক ভারসাম্যহীন৷ স্বামী, ছেলে থাকলেও বাড়িতে নিজের মতোই থাকতেন তিনি৷ কাউকে কিছু না বলেই গত ১৯ ফেব্রুয়ারি দুপুর দু’টো নাগাদ বেড়িয়ে গিয়েছিলেন শ্যামলীদেবী৷ বাড়ি ফিরে মাকে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন ছেলে সুভাষ দাস৷ কিন্তু পাননি মায়ের কোনও সন্ধান৷ সুভাষ বলেন, ‘‘বাড়ি ফিরে মাকে দেখতে পাইনি৷ তড়িঘড়ি গোটা পাড়ায় খোঁজখবর শুরু করি৷ সন্ধেয় রানাঘাট থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করি৷ এরপরও মায়ের কোন খোঁজ না পেয়ে রেলপুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করি৷ কিন্তু কিছুই লাভ হয়নি৷ অনেকদিন কেটে যায়৷ হঠাৎই সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট আমার নজরে আসে৷ দেখি ওটা আমার মায়ের ছবি৷ জানতে পারি চাকদহের কোনও গ্রামে মা ঘোরাফেরা করছেন৷ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করি৷ তাঁরাই আমার মাকে ফিরিয়ে দিয়ে গিয়েছেন৷ সদস্যদের ধন্যবাদ জানাই৷’’
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা জানান, বৃদ্ধাকে খুঁজে পেয়ে প্রথমে চাকদহ হাসপাতালে ভরতি করা হয়৷ যদিও হাসপাতাল থেকেও নিখোঁজ হয়ে যান শ্যামলী দাস৷ গত মঙ্গলবার চাকদহের ঘুগিয়া এলাকায় ফের তাঁকে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়৷ ওই এলাকা থেকেই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা তাঁকে উদ্ধার করেন৷ ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে মহিলার পরিচয় জানতে পারেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা৷ জানার পরেই তাঁরা শ্যামলী দাসকে ছেলের কাছে ফিরিয়ে দেন৷
আটদিন পর বাড়ি ফিরেছেন ওই বৃদ্ধা৷ তাঁকে খুঁজে পেয়ে খুশি ছেলে-স্বামী সকলেই৷ বাড়িতে ফিরেও অবশ্য নির্বিকার শ্যামলী দাস৷ কেন চলে গিয়েছিলেন, কোথায় গিয়েছিলেন প্রশ্নের কোনও উত্তর দিচ্ছেন না তিনি৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.