Advertisement
Advertisement
বৃদ্ধা

মেয়ের অত্যাচারে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত, নমাজ পড়া বন্ধ রেখে বৃদ্ধাকে বাঁচালেন টোটোচালক

বৃদ্ধার জীবনদাতার প্রশংসায় পঞ্চমুখ সকলেই৷

Elderly woman attempt to suicide, toto driver rescued her
Published by: Sayani Sen
  • Posted:May 25, 2019 1:17 pm
  • Updated:May 25, 2019 1:17 pm  

নন্দন দত্ত, সিউড়ি: মেয়েকে খুব কষ্ট করে বড় করেছিলেন৷ এখন বয়সের ভারে ন্যুব্জ তিনি৷ ভেবেছিলেন এই সময়ে পাশে পাবেন মেয়েকে৷ কিন্তু ভাবনার সঙ্গে মিলল না বাস্তব৷ পরিবর্তে মেয়ের হাতে অত্যাচারিত মা৷ যন্ত্রণার জীবন থেকে মুক্তি পেতে ভেবেছিলেন আত্মহত্যা করবেন৷ কিন্তু কথায় বলে রাখে হরি তো মারে কে? এক টোটোচালক আত্মহত্যা রুখলেন বৃদ্ধার৷ ‘জীবনদাতা’কে কুর্নিশ জানাচ্ছেন সকলেই৷

[ আরও পড়ুন: গেরুয়া ঝড়ে দুর্বল বাঘমুন্ডির ‘বাঘ’, জামানত খোয়ালেন কংগ্রেসের নেপাল মাহাতো]

পরণে নাইটি৷ মাথার চুল উসকো খুশকো৷ এমনই অবস্থায় এক বৃদ্ধা হাজির সিউড়ির মাণিক মারোয়াড়ির মোড়ে। সেখানেই গত দুবছর ধরে কাজল টোটো চালান। বৃদ্ধা কাজলকে বলেন, ‘‘বাবা, বিষের দোকান কোথায় নিয়ে যাবে। দানা বিষের দোকান।’’ মারোয়াড়ি মোড়ের কাছাকাছি রাসায়নিক বিষের দোকান ছিল। কাজলের কথায়, ‘‘আমি কাকিমাকে জিজ্ঞাসা করি, দানা বিষ নিয়ে কী করবেন? বৃদ্ধা জানান, সংসারে অশান্তি। মেয়ে আর বাড়ির পরিচারিকা আমার উপর অত্যাচার করে। আর সহ্য হয় না। আমি বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করব। বৃদ্ধাকে তিনি বলেন, কাকিমা আপনাকে মরতে হবে না। আমার বাড়ি চলুন।’’ এই বলেই সিউড়ি থানায় ওই বৃদ্ধাকে নিয়ে যান টোটোচালক৷

Advertisement

[আরও পড়ুন: দুর্গাপুরে ভরাডুবি তৃণমূলের, জেলা নেতৃত্বের ভূমিকায় দলের অন্দরে অসন্তোষ]

আদালত চত্বরে এক বিচারকের সঙ্গে দেখা হয় কাজলের। তিনিই সব শুনে ওই বৃদ্ধাকে আইনি পরিষেবা কেন্দ্রে নিয়ে যান। কেন্দ্রের সচিব বর্ণালী দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘আমি বৃদ্ধার কাছে সবিস্তারে গোটা ঘটনাটি শুনি। তার অসহায়তার কথা শুনে তাঁকে মহিলা থানায় পাঠাই। পুলিশ আধিকারিক শেখ রফিকের সঙ্গে কথা বলেন বৃদ্ধা৷ তিনি পুরপ্রধানকে গোটা বিষয়টি জানান। তাঁরই নির্দেশে পুরসভার পক্ষ থেকে এক প্রতিনিধি এসে শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বৃদ্ধার বাড়িতে যান।’’ পুলিশ জানায় ততক্ষণে প্রতিবেশীরা ওই বৃদ্ধার খোঁজ শুরু করেছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে বৃদ্ধার মেয়েকে সাবধান করা হয়৷ বৃদ্ধার উপর ফের নির্যাতন হলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন পুলিশ আধিকারিক৷

[ আরও পড়ুন: রাজ্যে গেরুয়া ঝড়, দিনভর বিনা পয়সায় চা খাওয়ালেন এক মোদিভক্ত]

আত্মহত্যা করতে যাওয়া ওই বৃদ্ধাকে বাঁচাতে গিয়ে দুপুরের নমাজ পড়া হয়নি টোটোচালক কাজল শাহের। সকাল থেকে থানা, আদালত, বৃদ্ধার বাড়ি ঘুরতে ঘুরতে ভাড়াও জোটেনি এক টাকা। তবুও কাজল একমুখ হাসি হেসে বললেন, ‘‘আমি উপরওয়ালার কাছে বৃদ্ধা কাকিমার জন্য দোয়া করেছি। আমার দুপুরের জহরের নমাজ পড়া হয়নি। এই ‘অপরাধ’ নিশ্চয়ই মাফ করেছেন আল্লাহ।’’ টোটোচালকের প্রশংসায় পঞ্চমুখ সকলেই৷

ছবি: শান্তনু দাস

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement