Advertisement
Advertisement
করোনা

লকডাউনে একমাস আটকে ভিনরাজ্যে, বাড়ি ফিরতে সাইকেলেই ৪৩১ কিমি পাড়ি মালদহের শ্রমিকদের

কর্মক্ষেত্রে খাদ্য সংকট দেখা দেওয়ায় বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নেন শ্রমিকরা।

Eight man cycles 431 kilometre's to reach house during lockdown
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:April 24, 2020 7:22 pm
  • Updated:April 24, 2020 7:37 pm  

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: করোনা আবহে স্তব্ধ দেশ। থমকে গিয়েছে জনজীবন। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের বহু শ্রমিক আটকে পড়েছেন ভিনরাজ্যে। বাধ্য হয়ে কেউ পায়ে হেঁটে বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছেন। এবার সুদূর ঝাড়খন্ড থেকে ৪৩১ কিমি দূরে মালদহের বাড়ি পৌঁছতে সাইকেলেই ভরসা করলেন বাংলার ৮ পরিযায়ী শ্রমিক।

ঝাড়খন্ডের জামশেদপুর থেকে বাংলার মালদহ। এই দুই রাজ্যের মাঝের পাঁচ জেলা পার করে বাড়ি পৌঁছতে শুক্রবার ভোর তিনটেয় সাইকেলে জামশেদপুর থেকে রওনা দেন বাবুল শেখ, মহম্মদ শাজাহান আলিরা। এরপর ৫৫ কিমি পথ পার হয়ে সকাল ন’টা নাগাদ পৌঁছয় পুরুলিয়ার বান্দোয়ানে। সাইকেলের পিছনে ব্যাগ, বস্তায় জামাকাপড়, থালা, বাটি, গ্লাস। আর শুকনো খাবার বলতে চিড়ে-মুড়ি। বান্দোয়ানে দাঁড়িয়ে তা মুখে দিয়েই আবার মালদহের উদ্দেশ্যে রওনা। তবে তাঁরা জানেন না, বাড়ি পৌঁছবেন কখন। আন্তঃজেলাও প্রায় সিল থাকায় পুলিশের খপ্পরে পড়ে তাঁদের ঠিকানা প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন হবে না তো? অজানা আশঙ্কা মনে চেপেই বাড়ির পথে পরিযায়ী শ্রমিকরা। মহম্মদ শাজাহান আলির কথায়, “আর পারছি না। এক মাস কোনওভাবে কাটিয়েছি। হাতে আর টাকাকড়ি কিছু নেই। যেখানে কাজ করতাম সেখানেও আর খাবার দিচ্ছে না। এবার বাড়ি না পৌঁছতে পারলে না খেয়েই মরতে হবে।”

Advertisement

Purulia-2

[আরও পড়ুন: করোনা যুদ্ধের অন্য সৈনিক, নাকা চেকিংয়ে পুলিশের সঙ্গী আয়ুশ চিকিৎসকও]

মাস দেড়েক আগে সুদূর মালদহের ইংরেজবাজার, কালিয়াগঞ্জ থেকে তাঁরা ঝাড়খন্ডের জামশেদপুরের বারমাইস থানার ক্যারেজ কলোনিতে কাজে যান। সেখানে ইট তৈরি, মাটি খোঁড়া -সহ নানান নির্মাণ কাজে যুক্ত ছিলেন প্রত্যেকেই। লকডাউনে আটকে যাওয়ায় বাড়ি ফিরতে পারেননি। তাই মাস খানেক ধরে ঠিকাদার সংস্থার অধীনে কর্মস্থলেই কোনওভাবে দিন কাটছিল। কিন্তু সেখানে ওই সংস্থা খাবার বন্ধ করে দেওয়ায় বিপদে পড়েন শ্রমিকেরা। এই অবস্থায় সংশ্লিষ্ট প্রশাসনও তাদের দিকে মুখ তুলে তাকায়নি বলে অভিযোগ। বাধ্য হয়ে আট শ্রমিক ছটি পুরনো সাইকেল কিনে বাড়ির পথ ধরেন। প্রতিমুহূর্তে নাকা চেকিংয়ে আটকে পড়ার ভয়। তবে বান্দোয়ান সীমানায় পুলিশের নজর এড়িয়ে পাকা রাস্তা ধরতেই যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন তারা। কয়েক মিনিট দাঁড়িয়ে শুকনো চিঁড়ে মুখে গুঁজে ফের প্যাডেলে পা। গন্তব্য যে আরও ৩৭৬ কিমি।

ছবি: অমিত সিংদেও

[আরও পড়ুন: রিপোর্ট Covid-19 পজিটিভ, হাসপাতালে ভরতি হতে যাওয়ার পথে মৃত্যু বৃদ্ধার]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement