দীপঙ্কর মণ্ডল: রাজ্যের সমস্ত সরকারি স্কুলে একই রঙের পোশাক – নীল ও সাদা, তাতে থাকবে ব্র্যান্ড ‘বিশ্ব বাংলা’র লোগো। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) ইচ্ছের কথা মাথায় রেখে এবার প্রস্তুতি শুরু হল। এ নিয়ে রবিবার সমগ্র শিক্ষা মিশনের তরফে নির্দিষ্ট বিজ্ঞপ্তি জারি করা হল। রাজ্যের স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি তৈরি করবে এই পোশাক। সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলিতে সরবরাহ করা হবে এসব পোশাক, এমনই জানানো হয়েছে সমগ্র শিক্ষা মিশনের তরফে। আগের মতই পড়ুয়ারা পাবে স্কুল ব্যাগ এবং জুতো। প্রত্যেকটি ব্যাগের উপরও থাকবে সরকারি লোগো।
কিছুদিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন স্কুল পড়ুয়াদের পোশাক (School Dress) এবার সরকার তৈরি করবে। বর্তমান নিয়মে স্কুলগুলি তাদের পছন্দমত কোনও নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা সংস্থাকে পোশাকের বরাত দেয়। সেই পোশাকের গুণমান নিয়ে বেশ কিছু ক্ষেত্রে প্রশ্ন ওঠে। সরকারের ধার্য করা দাম এবং পড়ুয়াদের কাছে পৌঁছনো পোশাকের মধ্যে সামঞ্জস্য থাকে না বলে অভিযোগ। অনেক সময় ছেলেমেয়েদের থেকে পোশাকের দাম নেওয়ারও অভিযোগ ওঠে। এই বৈষম্য দূর করার জন্য সরকারের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ দপ্তর (MSME) এবার পোশাক তৈরি করবে বলে ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেইমত চলতি মাসের শুরুতে মুখ্যসচিবের উপস্থিতিতে নবান্নে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় এমএসএমই দপ্তর পোশাকের পাশাপাশি জুতো এবং স্কুল ব্যাগও পাঠাবে। উল্লেখ্য, এই তিনটি সামগ্রী বিনামূল্যে ছাত্রছাত্রীরা পায়। এই পরিষেবায় পোশাকের রং এবং লোগো নতুন সংযোজন। স্কুল শিক্ষাদপ্তর জেলাশাসকদের চিঠি পাঠিয়ে বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছেন।
স্কুলের ছাত্রদের পোশাক সাদা প্যান্ট এবং নীল জামা। আর ছাত্রীদের সাদা শার্ট এবং নীল টিউনিক ফ্রক। তৈরি হবে নীল-সাদা (White-Blue)সালোয়ার কামিজও। প্রাক-প্রাথমিক থেকে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রদের একটি হাফ ও একটি ফুলপ্যান্ট দেওয়া হবে। তারা পাবে একটি হাফ ও একটি ফুল শার্ট। প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রীদের জন্য থাকবে দুই সেট করে শার্ট ও টিউনিক ফ্রক। তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীরা পাবে শার্ট ও স্কার্ট। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীদের জন্য থাকবে দুই সেট করে সালোয়ার কামিজ ও দুটি করে ওড়না। পোশাকের পকেটের কাছে থাকবে ‘বিশ্ব বাংলা’ (Biswa Bangla)লোগো।
শিক্ষামহলের বক্তব্য, ছাত্রছাত্রীদের পোশাক দেখে বোঝা যায় নির্দিষ্ট পড়ুয়া কোন স্কুলে পড়ে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বুকের কাছে স্কুলের নাম এবং লোগো থাকে। তা উঠে যাওয়ায় এবার বুঝতে সমস্যা হবে। পাশাপাশি প্রাচীন স্কুলগুলির পোশাকের ইতিহাস মুছে যাবে। সরকারি কর্তাদের বক্তব্য, আলাদা আলাদা করে কোন স্কুলের জন্য পোশাক তৈরি সম্ভব নয়। এই কারণে গোটা রাজ্যের জন্য নীল-সাদা রঙের পোশাক তৈরি হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.