ছবি: প্রতীকী
অর্ণব আইচ: অনলাইন জালিয়াতিতে বিপুল পরিমাণ টাকা লেনদেন চক্রের আরও এক পান্ডার সন্ধান গুজরাটে পেলেন গোয়েন্দারা। কলকাতায় এই চক্রের মূল অভিযুক্ত শৈলেশ পাণ্ডের মোট ২২টি অ্যাকাউন্ট থেকে এক বছরে ২০৭ কোটি টাকা লেনদেনের হদিশ পাওয়া গিয়েছে। এই টাকার উৎস ইডিও খতিয়ে দেখছে।
পুলিশ জানিয়েছে, শিবপুরের বাসিন্দা ব্যবসায়ী শৈলেশ পাণ্ডের দু’টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে এক মাসে ৭৭ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে বলে জানা যায়। সেই সূত্র ধরেই তদন্ত চালিয়ে লালবাজারের গোয়েন্দারা দক্ষিণ ২৪ পরগনার নরেন্দ্রপুরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের আরও ১৭টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সন্ধান মেলে। জানা যায়, ওই ১৭টি অ্যাকাউন্ট থেকে গত এক বছরে লেনদেন হয়েছে মোট ১৩০ কোটি টাকার। এখনও পর্যন্ত শৈলেশের কয়েকটি অ্যাকাউন্টে ২০৭ কোটি টাকার লেনদেনের হদিশ মিলেছে।
কিন্তু প্রত্যেকটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টেই ‘জিরো ব্যালান্স’। অথচ ওই অ্যাকাউন্টগুলি ছিল শৈলেশেরই নিয়ন্ত্রণে। তাই লগ্নির নামে একটি অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইন জালিয়াতিতে শৈলেশই অ্যাকাউন্টগুলিতে বিপুল পরিমাণ টাকার লেনদেনের ব্যবস্থা করে। ওই ২২টি ছাড়াও আরও কত কোটি টাকা কোন কোন অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সরানো হয়েছে, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে। একেকটি অ্যাকাউন্ট কয়েক মাসের জন্য ব্যবহার করার পরই বন্ধ করে অন্য অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যবস্থা করত শৈলেশ। নিজেকে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট বলে পরিচয় দিয়ে হেয়ার স্ট্রিট অঞ্চলের এক ব্যাংক ম্যানেজারের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে সে। পরে ওই ব্যাংক ম্যানেজার নরেন্দ্রপুরের শাখায় চলে গেলে ওই শাখাগুলি থেকেই টাকার লেনদেন করতে থাকে শৈলেশ।
ওই টাকার লেনদেনগুলি থেকে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এসেছে গোয়েন্দা পুলিশের হাতে। গোয়েন্দারা জেনেছেন, গত আগস্ট মাস থেকে দু’টি অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা যেত আরও পাঁচটি অ্যাকাউন্টে। ওই পাঁচটি থেকে টাকা প্রথমে যেত আরও ন’টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও পরে দু’টি অ্যাকাউন্টে। ওই শেষ ১১টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলি মূলত গুজরাটের আমেদাবাদের। সেগুলির মধ্যে শেষ দু’টি অ্যাকউন্ট থেকে পুলিশ ২০ কোটি টাকা ফ্রিজ করেছে। সেই সূত্রেই গোয়েন্দাদের কাছে খবর, গুজরাটের আমেদাবাদ ও সুরাটে রয়েছে ওই জালিয়াতি চক্রের অন্য মাথারা। তারাই ওই অ্যাপের মাধ্যমে ওই জালিয়াতি করেছে। তাদের সঙ্গে শৈলেশের কীভাবে যোগাযোগ হল, তা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। শৈলেশ ও তার ভাই অরবিন্দ, রোহিতের সন্ধানে উত্তরপ্রদেশের বালিয়ায় তল্লাশি চলছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তাদের সন্ধান মিলবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.