ফাইল ছবি।
অর্ণব আইচ: রেশন বন্টন দুর্নীতির মূল অভিযুক্ত বাকিবুর রহমানের হাত ধরেই মধ্যপ্রাচ্যে পা রাখা। বিদেশে বাকিবুরের ব্যবসায়েও লগ্নি করেছিলেন শংকর আঢ্য (Sankar Adhya)। এমনই অভিযোগ এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ED)। রেশন বন্টন দুর্নীতির কোটি কোটি টাকা কীভাবে বাকিবুর ও শংকর আঢ্যর সংস্থায় বিনিয়োগ হয়েছিল, সেই তথ্য জানার চেষ্টা করছেন ইডির গোয়েন্দারা।
ইডি সূত্রে জানা যাচ্ছে, দুবাই-সহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন শহরে বাকিবুর রহমানের (Bakibur Rahman) যোগাযোগ বহুদিনের। সেই যোগাযোগের সূত্র ধরেই সেসব জায়গায় ব্যবসা শুরু করেন বাকিবুর রহমান। বাকিবুরের স্ত্রী প্রথমে ইডি আধিকারিকদের জানান তাঁর বিদেশে ব্যবসার কথা। সেই সূত্র ধরে তদন্তকারীরা জানতে পারেন যে, দুবাইয়ে রীতিমতো গাড়ি ও বাইকের ব্যবসা করতেন বাকিবুর! রেশন বন্টন দুর্নীতির কোটি কোটি টাকা বাকিবুরের গাড়ি সংস্থায় বিনিয়োগ করা হয় বলে অভিযোগ। ক্রমে ওই দুর্নীতির বিপুল টাকা দিয়ে বাকিবুর দুবাইয়ে পানশালার (Bar)ব্যবসা খোলার পরিকল্পনা করেন বলে দাবি বাকিবুরের। তার আগেই ইডির হাতে গ্রেপ্তার হয়ে যান।
যদিও গোয়েন্দাদের মতে, বাকিবুর গ্রেপ্তার হলেও বিদেশে তাঁর হোটেল ও পানশালার ব্যবসা ঘুরপথে চালু রয়েছে। ইডি জানতে পেরেছে, বাকিবুর রহমানই বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্যকে বিদেশের ব্যবসার রাস্তা দেখান। বাকিবুরের হাত ধরেই শংকর দুবাইয়ে একটি সংস্থা খোলেন। ট্রেডিংয়ের সঙ্গে যুক্ত ওই সংস্থাটি শংকর আঢ্যর ছেলে শুভর নামে। ইডির দাবি, রেশন বন্টন দুর্নীতির টাকা বিদেশে পাচার হয়ে লগ্নি হয়েছে বাকিবুর ও শংকরের সংস্থায়। সেই সূত্র ধরে বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান নিজের সংস্থার মাধ্যমেও বাকিবুরের সংস্থায় টাকা লগ্নি করেছিল কি না, সেই ব্যাপারে ইডি তদন্ত চালাচ্ছে।
ফোরেক্স সংস্থার মাধ্যমে শংকর আঢ্য কোটি কোটি ভারতীয় টাকা, ডলার-সহ বৈদেশিক মুদ্রায় (Foreign currency) পরিণত করে বিদেশে পাচার করেছেন, এই অভিযোগ আগেই উঠেছে। সেসব সংস্থায় তল্লাশিও চালিয়েছে ইডি। বাকিবুরের ব্যবসায় প্রয়োজন হয় বিপুল পরিমাণ ডলার ও বৈদেশিক মুদ্রার। ইডির গোয়েন্দাদের মতে, শংকরকে দিয়ে সংস্থা খুলিয়ে বাকিবুরই বিদেশি মুদ্রা নিজের সংস্থায় লগ্নি করান। সেই ক্ষেত্রে রেশন বন্টন দুর্নীতির টাকা শংকরের সংস্থার মাধ্যমেই বাকিবুরের সংস্থায় পৌঁছে যেত বলেই ইডির কাছে খবর। আবার বাকিবুরের গাড়ি সংস্থার লাভের অংশ শংকর আঢ্য পেতেন, এমন সম্ভাবনাও গোয়েন্দারা উড়িয়ে দিচ্ছেন না। এবার বাকিবুর রহমানের পানশালার ব্যবসার উপরও নজর দিচ্ছে ইডি। বাকিবুর গ্রেপ্তার হওয়ার পরও শংকর আঢ্য ও তাঁর ছেলের মাধ্যমে ওই পানশালার ব্যবসায় টাকা লগ্নি হয়েছিল কি না, সেই তথ্যও জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইডি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.