Advertisement
Advertisement

Breaking News

ইসিএল

ভুঁড়িওয়ালা গার্ড ইতিহাস, এবার স্মার্ট সিকিউরিটি পাচ্ছে ইসিএল

এর ফলে কয়লা চুরি কমবে বলেই ধারণা স্থানীয়দের।

ECL to gets modern security structure in Asansol in West Burdwan.
Published by: Soumya Mukherjee
  • Posted:August 6, 2019 6:05 pm
  • Updated:August 6, 2019 6:05 pm  

চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: হাতে খৈনি, গায়ে বোতাম ছেঁড়া খাকি উর্দি, পায়ে হাওয়াই চপ্পল। ভুঁড়িওয়ালা সেই লালধারী বা গিরিধারী নামক নিরাপত্তারক্ষী দেখার দিন এবার শেষ কয়লা খনিতে। তার বদলে দেখা মিলবে মেদহীন চেহারা, পরিষ্কার খাঁকি উর্দি, পায়ে জুতো, মাথায় টুপি, কোমরে রিভলভার গোঁজা নিরাপত্তারক্ষীদের। দেখে মনে হবে যেন আধাসেনার জওয়ান! এদের হাত ধরেই ইসিএলের কয়লাখনিতে আমূল পরিবর্তন হতে চলেছে নিরাপত্তা ব্যবস্থার।

[আরও পড়ুন: ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি থেকে ফেরার পথে খুন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য]

কয়লা চোরদের সঙ্গে মোকাবিলা করতে ও চোরাই কয়লা লেনদেনে লাগাম টানতে এবার নিরাপত্তায় জোর দিল ইসিএল। নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করল। ইসিএলের ৯০০ জন সুরক্ষাকর্মী ও ১০০ জন আধিকারিককে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করল ঝাড়খণ্ড পুলিশ। তবে এর জন্য ইসিএলকে গুনতে হবে সুরক্ষাকর্মী প্রতি ১০ হাজার টাকা করে। ঝাড়খণ্ড পুলিশের আইআরবিএফকে সেই টাকা দিতে হবে। প্র্যাকটিক্যাল ও থিয়োরি মিলিয়ে রীতিমত মিলিটারি কায়দায় এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। সোমবার থেকে জামতাড়া আইআরবিএফ ক্যাম্পে শুরু হয়েছে প্রশিক্ষণ।

Advertisement

এপ্রসঙ্গে ইসিএলের সিকিউরিটি আধিকারিক তন্ময় দাস বলেন, তিনটি পর্যায়ে সুরক্ষাকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রথম পর্যায়ে ৩৫০ সুরক্ষাকর্মীর প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়েছে। ২৮ দিন ধরে এই প্রশিক্ষণ চলবে। এইসব নিরাপত্তারক্ষীদের থিয়োরি ক্লাস হবে। আইনের পাঠ পড়ানো ও সিজার লিস্ট কাটা শেখানো হবে। বোঝানো হবে কয়লা চুরি সংক্রান্ত আইনের ধারাও। প্র্যাকটিকালে শেখানো হবে কড়া অনুশাসন। জোর দেওয়া হবে ফিটনেসে। খাওয়া দাওয়া, দৌড়ঝাঁপ, বন্দুক চালানোর প্রশিক্ষণও দেবে ঝাড়খণ্ড পুলিশ। তবে প্রশিক্ষণে ব্যবহৃত গুলি বারুদের জোগান দিতে হবে ইসিএলকে। সিকিউরিটি আধিকারিকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে ব্যারাকপুরে। কয়লা চুরি রোধে নিজের এরিয়ায় সুরক্ষাকর্মীদের কড়া নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হবে। বিশেষ করে ইসিএলের লিজ হোল্ড এলাকায় কয়লাচুরি হলে তার দায়িত্ব নিতে হবে সুরক্ষাকর্মীদেরই। গাফিলতি হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে তাঁদের বিরুদ্ধে। নিরাপত্তারক্ষীরা প্রশিক্ষিত হলে তাঁদের মনোবল বাড়বে। তাঁদের স্মার্ট উর্দির গেটআপ ও ফিটনেস দেখে কয়লা চোরেরাও ভয় পাবে। অতীতে ইসিএলের নিরাপত্তারক্ষীদের ঢিলেঢালা অবস্থা দেখে চোরের দল ভয় পাচ্ছিল না।

[আরও পড়ুন: স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ, ছাত্রমৃত্যুতে ধুন্ধুমার আন্দুলে]

ইসিএলের ডায়রেক্টর পার্সোনাল বিনয় রঞ্জন জানান, সিকিউরিটিদের প্রশিক্ষণের জন্য বেঙ্গল পুলিশ ও ঝাড়খণ্ড পুলিশকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। আবেদনে প্রথমে সাড়া দেয় ঝাড়খণ্ড পুলিশ।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, খনি অঞ্চলে বেআইনি কয়লা খনন চলছে দীর্ঘদিন ধরেই। মূলত তিন পদ্ধতিতে এই কয়লা চুরি চলে। প্রথমত, ইসিএল বা ব্যক্তি মালিকানার জমিতে অবৈধ খাদান তৈরি করে কয়লা তোলা হয়। দ্বিতীয়ত, ইসিএলের বন্ধ বা চালু খোলা মুখ খনিতে গভীর সুড়ঙ্গ (ব়্যাট হোল) বানিয়ে কয়লা তোলা হয়। তৃতীয়ত, ইসিএলের কয়লা ডাম্পার বা রেলের পরিবহণের সময়ে কয়লা নামিয়ে নেওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট গঠনের পরে ইসিএল বা ব্যক্তি মালিকানার জমিতে খাদান তৈরি করে কয়লা তোলা কমেছে। কিন্তু, অন্য সব পদ্ধতিতে এখনও চুরি চলছে।

ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই কয়লার ডিপোগুলিকে ও খনিগুলিকে বাউন্ডারি দিয়ে ঘেরা হয়েছে। লাগানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। কয়লা পরিবহণের গতিবিধি নজর রাখতে ডাম্পারগুলিতে জিপিএস লাগানো হয়েছে। কয়লা চুরি রোধে আমজনতার জন্য লঞ্চ করা হয়েছে ‘খান প্রহরী’ অ্যাপ। এর পাশাপাশি নতুন ৭০০ সুরক্ষা কর্মী নেওয়া হয়েছে। যাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়েছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement