ছবিতে উদ্ধার হওয়া ভেজাল তেল
সোমনাথ পাল, বনগাঁ: সামনে মুদির দোকান। পিছনে ভেজাল তেলের কারখানা। এভাবেই চলছিল বছরের পর বছর। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে এই ভেজাল তেলের কারখানার হদিশ পেল এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ (ইবি)। গোপনসূত্রে খবর পেয়ে শুক্রবার রাতে বনগাঁ থানার গোবরাপুর বাজারে অভিযান চালায় এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের একটি টিম। হানা দেয় মুদি দোকানি বিকাশ সরকারের বাড়ি লাগোয়া দোকানে হানা দিতেই ভেজাল তেলের করাখানা প্রকাশ্যে আসে। দেখা গিয়েছে, বাড়ির সঙ্গে লাগোয়া সামনের অংশে রয়েছে মুদির দোকান। আর পিছনে রয়েছে গোডাউন ও কারখানা।
গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, পাম অয়েলের সঙ্গে রাসায়নিক মিশিয়ে সরষের তেল তৈরি করত বিকাশ সরকার। তারপর ওই তেল প্যাকেট ও বোতলজাত করে বাজারে বিক্রি করা হত। নিজের মুদির দোকান থেকেও এই ভেজাল তেল বিক্রি করত বিকাশ সরকার। বনগাঁ মহকুমার বিভিন্ন মুদির দোকানে এই ভেজাল তেল সরবরাহ করা হত। সরবরাহ হওয়া তেল নিয়ে একের পর এক অভিযোগ আসতে শুরু করে। এরপরেই ঘটনার তদন্তে নাম এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ। তদন্তের সূত্র ধরেই উঠে আসে গোবরাপুর বাজারের মুদি দোকানি বিকাশ সরকারের নাম। অভিযুক্তকে হাতেনাতে ধরতে শুক্রবার রাতেই অভিযান চালানো হয়। এই অভিযানে বিকাশের বাড়ি থেকে প্রচুর পরিমাণে তেলের টিন, বিভিন্ন নামী কোম্পানির সরষের তেলের লেবেল এবং অয়েল মিক্সিংয়ের সরঞ্জাম উদ্ধার হয়েছে। ভেজাল তেল বোতলবন্দি করে তারপর নামী কোম্পানির লেবেলে মুড়ে বিক্রি করা হত বলে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন। এমনকী, এই তেল কারখানার কোনও বৈধ কাগজপত্রও ছিল না।
এদিকে এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের আধিকারিকরা হানা দিতে পারেন, খবর পেয়েই মুদি দোকানি বিকাশ সরকার উধাও হয়েছে। তার খোঁজে বনগাঁ সীমান্তে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। কোথা থেকে তেল আসত, কীভাবে তা মিক্সিং হত, কোন দোকানে বিক্রি হত, কারা এই চক্রে জড়িত। যাবতীয় বিষয়ে খোঁজ খবর করতে শুরু হয়েছে তদন্ত। অভিযুক্ত ধরা পড়ার ভয়ে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে যেতে পারে। এরকম খবর আসায় সীমান্তেও তল্লাশি শুরু হয়েছে। পাশাপাশি ওই ভেজাল তেলের কারখানাটিকে সিল করে দিয়েছেন এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের আধিকারিকরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.