দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: কাঁচা আনাজ ও সবজির বাজারদর আকাশচুম্বী। মধ্যবিত্তের হেঁশেলে আগুন। তাই কলকাতার পর এবার জেলার বাজারগুলিতেও মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে অভিযানে নামল এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ। রবিবার চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের ইবি দপ্তরের আধিকারিকরা শেওড়াফুলি হাটে গিয়ে পাইকারি সবজি, আলু ও পিঁয়াজ ব্যবসায়ীদের রীতিমতো সতর্ক করে দিয়ে যান, তারা যেন কোনও অবস্থাতেই অধিক মুনাফার জন্য বেশি দামে সবজি বিক্রি না করেন।
রবিবার ইবির আধিকারিকরা শেওড়াফুলি হাটে সমস্ত ব্যবসায়ীদের ডেরায় গিয়ে তাদের বেচাকেনার সমস্ত নথি খতিয়ে দেখেন। মূলত
বিভিন্ন এলাকার স্থানীয় বাজারগুলির সঙ্গে হাটের পাইকারি বাজারের আলু, পিঁয়াজ ও অন্যান্য সবজির মূল্যের কতটা বৈষম্য রয়েছে তা খতিয়ে দেখেন। তবে সবজি বিক্রির ক্ষেত্রে কোনওরকম অসামঞ্জস্য দেখলে তারা ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেবেন বলে সতর্ক করে দেন।
এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ এভাবে অভিযান চালালেও গৃহস্থের কিন্তু মাথায় হাত। রবিবারও হুগলির উত্তরপাড়া, হিন্দমোটর, কোন্নগর, রিষড়া, শ্রীরামপুরের বাজারগুলি থেকে চড়া দামে মানুষকে আনাজ ও সবজি কিনতে হয়েছে। রবিবারের বাজারে জ্যোতি আলু প্রতি কেজি ২২ টাকা, চন্দ্রমুখী আলু ২৬ টাকা ও পেঁয়াজ ৭০ টাকা কেজি দরে বিকিয়েছে। বাজারে এই সময় গাজরের মূল্য কখনওই ৪০ টাকার বেশি হয় না, অথচ সেই গাজরের বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকা কেজি। মাঝারি আকারের ফুলকপি ৩০ টাকা ও একটু বড় আকারের ফুলকপি ৫০ টাকা দর ছিল। সবচেয়ে অবস্থা খারাপ বাঁধাকপির, কেজি ৪০ টাকা। ঝিঙের অবশ্য বাজারে দেখা মেলা ভার।
এই অগ্নিমূল্যের বাজারে দরাদরি করলে অনেক সময়ই বিক্রেতাদের কটূক্তির সম্মুখীন হতে হচ্ছে খদ্দেরকে। অনেক বিক্রেতাই বলছেন, ‘বিক্রি না হলে পচে গেলে ফেলে দেব তবু বেচব না।’ এরকম পরিস্থিতিতে হুগলির বিভিন্ন পুর এলাকার বহু বাজার রাস্তা দখল করে বসে ব্যবসা করে, অথচ তারা পুরসভাকে কোনও ট্যাক্স দেয় না বলে অভিযোগ। অথচ পুর এলাকার যাবতীয় সুযোগসুবিধা তারা গ্রহণ করে। সাধারণ মানুষের বক্তব্য, রাস্তা মানুষের চলার জন্য। তাই এদের আলাদা করে জায়গা পাকা বাজার করে দেওয়া হোক, তাহলে পুরসভারও আয় হবে। এরাও অনেকটা আচরণে সংযত হবে। পাশাপাশি তাঁদের বক্তব্য, পাইকারি বাজারে শুধু অভিযান হলেই চলবে না, স্থানীয় বাজারগুলিতে ইবি অভিযান না চালালে এদের নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.