ফাইল ছবি
নব্যেন্দু হাজরা: কখনও যৌন অসুখ সারানোর পোস্টার, কখনও গোপনে নেশা ছাড়ানোর নামে বিভিন্ন ‘জ্যোতিষে’র বিজ্ঞাপন। কখনও আবার রোজগারের হাতছানি আড়ালে দেহব্যবসায় যোগ দেওয়ার দেওয়ালপত্র। লোকাল ট্রেনের কামরা জুড়ে কুরুচিকর বিজ্ঞাপনের ছড়াছড়ি। তা নিয়ে মানুষের মধ্যে ক্ষোভও যথেষ্ট। কিন্তু লাগাচ্ছে কে! সাধারণ যাত্রীদের মতো এই প্রশ্ন রেলের কর্মীদের মধ্যেও। যেখানে ট্রেনের কোচে পড়ছে রংয়ের প্রলেপ। সাজানো হচ্ছে কামরা। সেখানেই চেপকানো হচ্ছে এই সমস্ত কুরুচিকর বিজ্ঞাপন। যাতে দৃশ্যদূষণ তো হচ্ছেই, একইসঙ্গে পোস্টারে থাকা নোংরা ভাষা এবং আজেবাজে ছবিতে প্রভাবিত হচ্ছে শিশু-কিশোর মনও।
ট্রেনের কামরায় যাত্রীদের গলায় হামেশাই শোনা যায় এই কথা, ‘‘কারা লাগায় এই সমস্ত বিজ্ঞাপন। কখনও কারও চোখে পড়ে না।’’দেরিতে হলেও অবশেষে টনক নড়েছে পূর্ব রেলের (Eastern Railway)। একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, লোকাল ট্রেনের ভেতরে কুরুচিকর যেসব বিজ্ঞাপন যথেচ্ছভাবে লাগানো হয়েছে সেগুলো ট্রেন যাত্রীরা পছন্দ করেন না এবং এটি রেলওয়ে আইন বিরুদ্ধ। এ ধরনের বিজ্ঞাপনগুলি ট্রেনের ভেতরে লাগানো হলে রেলওয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। আরপিএফ বিভিন্ন ডিভিশনে ইতিমধ্যেই এই অবৈধ বিজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে। পূর্ব রেলের তরফ থেকে নিত্যযাত্রীদের কাছে অনুরোধ, “ভবিষ্যতে এই ধরনের বিজ্ঞাপন ট্রেনের কামরায় লাগাতে দেখলে আপনারা কর্তব্যরত আরপিএফকে জানান। আপনাদের তরফ থেকে সাড়া পাওয়া গেলে ট্রেনের আভ্যন্তরীণ পরিবেশের মান আরো উন্নত হবে যা কার্যত যাত্রীদের দৃশ্য দূষণের হাত থেকে বাঁচাবে।”
যাত্রীদের বক্তব্য, শুধু ট্রেনের কামরাতেই নয়, প্ল্যাটফর্মের বাথরুমের গায়েও এই নোংরা পোস্টার লাগানো থাকে। আর ট্রেনের কামরার যা অবস্থা থাকে, তাতে তাকানো যায় না। শিশু থেকে প্রবীণ নাগরিক সকলের উপরই এর খারাপ প্রভাব পড়ে। সবথেকে বেশি বিজ্ঞাপন থাকে যৌন অসুখ সংক্রান্ত। বহু বাচ্চাই তা দেখে। নানাবিধ প্রশ্নের মুখোমুখিও হতে হয় বাড়ির লোকজনকে। কিন্তু রেলের আধিকারিকরাও জানাচ্ছেন, এই পোস্টারগুলো কামরায় দেখা যায়। কিন্তু কে যে লাগান, তা দেখা যায় না। ভৌতিক কান্ড। তাই যাত্রীদের উদ্দেশে রেলের বার্তা, কেউ যদি ট্রেনের কামরা এই পোস্টার আটকে কাউকে অপরিষ্কার করতে দেখেন, তাহলে তিনি যেন কর্তব্যরত আরপিএফকে খবর দেন। যদি কেউ ধরা পড়েন, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, ‘‘কেউ যদি অন্য কারও বাড়ি নোংরা করেন, সেটা যেমন মেনে নেওয়া যায় না। তেমনই ট্রেনের কামরায় শুধু বিজ্ঞাপন লাগানো হবে, সেটাও মানা যায়না। তাই আমরা নজর রাখছি। কেউ ধরা পড়লে তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.