রঞ্জন মহাপাত্র: বছরশেষে এমনিই হাত টানাটানি। আনন্দের বাহারে লাফিয়ে বেড়েছে খরচের বহরও। ঠিক সেই সময় যদি অ্যাকাউন্টে অপ্রত্যাশিত টাকা ঢোকার খবর আসে, তবে তো সোনায় সোহাগা। আর টাকার অঙ্ক যদি প্রায় এক লক্ষ হয়, তবে চক্ষু চড়কগাছ হওয়া স্বাভাবিক। ঠিক এরকমই এসএমএসে হুলস্থূল পড়ল এগরায়।
[ বল ভেবে বোমা নিয়ে খেলতে গিয়ে বিস্ফোরণ, গুরুতর আহত ১ শিশু ]
ঘটনা এগরার চিরুলিয়ার এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কিয়স্ক শাখার। গ্রাহকদের কেউ দিনমজুর, কেউবা ভ্যান-রিকশা চালক। অ্যাকাউন্টে বিশেষ টাকা-পয়সা থাকে না। সঞ্চয় তো সামান্যই। মেরেকেটে কয়েক হাজার টাকা সম্বল। আর কন্যাশ্রী বা অন্যান্য পরিষেবা মারফত যে টাকা ঢোকে তারই এসএমএস আসে। জানা যাচ্ছে, গত ১২ ডিসেম্বর ওই ব্যাঙ্কের প্রায় হাজার পাঁচেক গ্রাহকের মোবাইলে একটি এসএমএস ঢোকে। যেখানে স্পষ্ট উল্লেখ যে, অ্যাকাউন্টে পড়েছে প্রায় এক লক্ষ টাকা। মাত্র একটা টাকা কম। চোখ কচলে দ্বিতীয়বার দেখেন গ্রাহকরা। কিন্তু কোনও ভুল নেই। এর আগে কাঁকিনাড়ায় এরকম গুজব রটেছিল। কিন্তু তার কোনও সত্যতা ছিল না। কিন্তু এখানে সেরকম নয়। সত্যি সত্যিই অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে। জ্বলজ্বল করছে এসএমএস। তাও আবার এক বা দুজনের অ্যাকাউন্টে নয়, কয়েক হাজার গ্রাহকের ক্ষেত্রেই একই অবস্থা। মুহূর্তে সকলে ধরে দেন, প্রতিশ্রুতিমতো জনধন যোজনায় লক্ষ টাকা পাঠিয়েছেন মোদি। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি রেখেছেন তিনি। কালো টাকা উদ্ধার করে পনেরো লক্ষ পাঠানোর কথা ছিল, আপাতত নাহয় এক টাকা কম এক লক্ষ টাকাই সই।
[ নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে ২০১৮ বার ঠান্ডা জলে ডুব যুবকের ]
খবর ছড়াতেই ব্যাঙ্কে ভিড় জমতে থাকে। অসংখ্যা মানুষের চাপে চিরুলিয়ার ওই ব্যাঙ্কের কর্মীদের তখন নাজেহাল অবস্থা। কিন্তু টাকা তুলতে গিয়ে দেখা যায়, অ্যাকাউন্টগুলো হোল্ড করা হয়েছে। লক্ষ টাকা দূরে থাক, নিজের সঞ্চয়ের টাকাও তুলতে পারছেন না গ্রাহকরা। টাকা জমাও দিতে পারছেন না। ফলে ঘোর বিপাকে পড়েন তাঁরা। বাড়তে থাকে ক্ষোভ। ব্যাপার কী? চিরুলিয়ার ওই কিয়স্ক শাখার পক্ষে গুণধর দাস জানান, প্রথমে টাকার উৎস নিয়ে ধন্দে ছিল ব্যাঙ্কও। পরে জানা যায়, সার্ভার গণ্ডগোলের জন্যই এই বিপত্তি। অঙ্ক গোলমাল করে উধোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে গিয়েছে চেপে। গোটা দেশেই সেদিন সার্ভার সমস্যা হয়েছিল। তারই শিকার চিরুলিয়ার ওই শাখার গ্রাহকরা। ফলত অ্যাকাউন্ট হোল্ড করা ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না। এদিকে মুহূর্তে লাখপতি, মুহূর্তে তা হতে না পেরে বেশ ক্ষুব্ধই হাজার কয়েক গ্রাহক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.