গৌতম ব্রহ্ম ও সৌরভ মাজি: পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়ার অসুস্থতার কারণ নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা৷ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, স্নায়বিক সমস্যার কারণেই তিনি হাসপাতালে ভরতি হয়েছেন৷ তবে অসমর্থিত সূত্রের খবর, কাটমানি ইস্যুতে চাপ সহ্য করতে না পেরে ঘুমের ওষুধ খেয়েই আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন শম্পা দেবী৷ বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তাঁর৷ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আপাতত তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল৷
সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ প্রায় গোটা এলাকাতেই চাউর হয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়ার অসুস্থতার খবর৷ তড়িঘড়ি তাঁকে বাড়ি থেকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার স্পেশ্যালিটি উইংয়ের অনাময় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ কিন্তু সেখানে আইসিইউ পরিষেবা নেই৷ তাই বাধ্য হয়ে তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷ অনাময় হাসপাতাল থেকে কার্যত যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শম্পাদেবীকে বর্ধমান মেডিক্যালে নিয়ে আসা হয়৷ আগে থেকেই একটি আইসিইউ শয্যা ফাঁকা করে রাখা হয়েছিল৷ অ্যাম্বুল্যান্স থেকে নেমে নিজেই পায়ে হেঁটে এদিন হাসপাতালে ঢোকেন শম্পাদেবী৷ আইসিইউ ৫-এ ভরতি রেখে তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়েছে৷ হাসপাতালের সুপার উৎপল দাঁ বলেন, ‘‘কিছু স্নায়বিক সমস্যার জন্য শম্পাদেবীকে হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে৷ আইসিইউতে উনি রয়েছেন৷ এখন তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল৷’’
যদিও অসমর্থিত সূত্রের খবর, অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খেয়ে ফেলায় তাঁর স্নায়বিক সমস্যা বেড়ে গিয়েছে৷ সূত্রের আরও খবর, কাটমানি ইস্যুতে সম্প্রতি ঘরে-বাইরে প্রবল চাপের মুখে পড়েছিলেন শম্পাদেবী৷ রাজ্যের তৈরি গ্রিভান্স সেলে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগও জমা পড়েছিল৷ অভিযোগ খতিয়ে দেখতে গত বুধবার উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা পূর্ব বর্ধমানে যান৷ জেলাশাসক বিজয় ভারতীর উপস্থিতিতে তদন্তকারীরা জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া, সহকারী সভাধিপতি দেবু টুডুর সঙ্গে বৈঠক করেন৷
সেখানেই টেন্ডারে ধরা পড়ে অনিয়ম৷ শম্পা ধাড়ার বিরুদ্ধে ৪ শতাংশ কাটমানি নেওয়ার প্রমাণও মেলে৷ তাই অনেকেরই দাবি, এসব সমস্যার জেরেই চাপ এড়াতে ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন শম্পাদেবী৷ এখনও পর্যন্ত জেলা পরিষদের সভাধিপতি শারীরিক অসুস্থতার প্রকৃত কারণ জানা যায়নি৷
ছবি: মুকুলেসুর রহমান
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.