ধীমান রায়, কাটোয়া: ননদের স্বামীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়েছিলেন। প্রেমে মজে স্বামী-সন্তান ভুলে তাঁর সঙ্গেই ঘর সংসার করছিলেন ওই বধূ। কিন্তু সংসার সুখের হল না। ননদের বাড়িতেই অগ্নিদগ্ধ হয়ে প্রাণ হারালেন বধূ। এমন ঘটনাতেই তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায় পূর্ব বর্ধমানের (East Burdwan) কাটোয়ায়।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতা বিনোদিনী পণ্ডিত (২৭) কাটোয়া থানার রায়পাড়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। শুক্রবার রাতে তাঁর প্রেমিক তথা ননদের স্বামী চিন্ময় ঘোষ তাঁকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভরতি করে পালিয়ে যান। রাতেই মৃত্যু হয় বিনোদিনীর। মৃতার বাপের বাড়ির সন্দেহ, গায়ে আগুন লাগিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে বধূকে। যদিও পুলিশ জানায়, শনিবার বিকেল পর্যন্ত এনিয়ে নির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
মৃতার পরিবার সূত্রে খবর, বীরভূমের বোলপুর থানার যশরা গ্রামের বাসিন্দা অশোক আস্থা ও শিলাদেবীর মেয়ে বিনোদিনীর সঙ্গে প্রায় ১০ বছর আগে বিয়ে হয়েছিল রায়পাড়ার বাসিন্দা কৌশিক পণ্ডিতের। কৌশিকবাবুর একটি সাইকেল মেরামতের দোকান রয়েছে গ্রামেই। তাঁদের ৯ বছরের একটি মেয়েও আছে।
শিলাদেবীর কথায়, কয়েক বছর ধরে তাঁর জামাই মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। চিকিৎসা চলছিল তাঁর। ওই গ্রামেই বাড়ি কৌশিকবাবুর দিদির। কৌশিকের জামাইবাবু চিন্ময় ঘোষ ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতেন তাঁর শ্যালককে। সেই সূত্রেই চিন্ময়ের সঙ্গে বিনোদিনীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরিবার সূত্রে আরও জানা যায়, ২০১৮-র জুলাইয়ে বিনোদিনীকে সঙ্গে নিয়ে পাকাপাকিভাবে কাটোয়া শহরে চলে আসেন চিন্ময়। সেখানে একটি বাড়ি ভাড়া করেই সংসার পাতেন। সব ঠিকঠাকই চলছিল। তবে মাস তিনেক আগে চিন্ময় রায়পাড়া গ্রামে নিজের বাড়িতে ফিরে যান। সঙ্গে যান বিনোদিনীও। চিন্ময়ের বাড়িতেই থাকছিলেন তিনি।
শিলাদেবী বলেন, “মেয়ে অন্যজনের সঙ্গে সংসার শুরু করার পর আমরা আর মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখিনি। নাতনিকে নিজেদের কাছে নিয়ে আসি। তারপর এদিন খবর পাই আমার মেয়ে মারা গিয়েছে। কাটোয়া এসে জানতে পারি প্রায় ১২ দিন আগে আমার মেয়ে চিন্ময়ের বাড়িতে পুড়ে যায়। কিন্তু ওর চিকিৎসা না করিয়ে বাড়িতেই ফেলে রাখা হয়েছিল। তারপর শুক্রবার হাসপাতালে ভরতি করে পালিয়ে যায় চিন্ময়। আমাদের ধারণা আমার মেয়ের গায়ে আগুন লাগিয়ে খুন করা হয়েছে। পুলিশের কাছে তদন্তের দাবি জানিয়েছি।” ইতিমধ্যেই মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.