সৌরভ মাজি, বর্ধমান: বছরের শুরুতে যে পরিবার কাজ পেয়েছে বছরভর সেই পরিবারকে দিয়েই কাজ করানো হয়েছে ১০০ দিনের প্রকল্পে। নতুন আর কাজ দেওয়া হয়নি। ফলে এই প্রকল্পে পরিবারপিছু কাজ দেওয়ার গড় দিন অনেক বেড়ে গিয়েছে। এর জেরে পূর্ব বর্ধমান দেশের সেরাও হয়েছে পরিবারপিছু গড়ে কাজ দেওয়ার নিরিখে। বিগত দুই আর্থিক বছরে পূর্ব বর্ধমান জেলায় এই প্রবণতা থাকায় খাতায় কলমে ভাল ফল হয়েছে। কিন্তু তাতে বহু পরিবার কাজ না পেয়ে ক্ষোভে ফুঁসেছে।
বিষয়টি জানতে পেরে গরীব মানুষকে এইভাবে বঞ্চিত করা চলবে না। বর্ধমানে প্রশাসনিক বৈঠক করে এই নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সাফ বলেছেন, ‘গড়ে বাংলা দেশের মধ্যে এক নম্বরে হয়েছে। তবে জবকার্ড হোল্ডাররা যাতে সকলেই কাজ পান তা দেখতে হবে। কেউ কাজ পাচ্ছে না এমনটা যেন না হয়। গড় বৃদ্ধি করুন, কিন্তু একইসঙ্গে সকলেই যাতে কাজ পায় তাও লক্ষ্য রাখুন।’ সেই নির্দেশমত প্রশাসন পদক্ষেপ শুরু করেছে বলে খবর
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমান জেলায় মোট পরিবার রয়েছে ৯০ লক্ষ ৬৯২টি। তার মধ্যে জবকার্ড হোল্ডার রয়েছে ৮ লক্ষ ৯৭ হাজার ৩৬৯টি। ২০১৮-১৯ আর্থিক বছরে ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ চেয়েছিলেন ৪ লক্ষ ২৮ হাজার ৯৯৪ টি। তার মধ্যে কাজ পেয়েছেন ৪ লক্ষ ১১ হাজার ৬০০। জেলায় মোট কর্মদিবস সৃষ্টি হয়েছিল ৩ কোটি ৪২ লক্ষ ১৮ হাজার ৯৪৯। আর বছরে ১০০ দিনই কাজ পেয়েছিল ১ লক্ষ ৬৯ হাজার ১০১টি পরিবার। ওই আর্থিক বছরে জেলায় পরিবারপিছু গড়ে ৮৩.১৪ দিন কাজ দেওয়া হয়। আর এই গড় বাড়াতে গিয়েই অনেক পরিবারকে বঞ্চিত হতে হয় বলে অভিযোগ।
জবকার্ড হোল্ডারদের অনেকেই জানাচ্ছেন, কোনও এলাকায় কিছু পরিবার বছরের শুরুতে এই প্রকল্প কাজ পেয়েছিলেন। বছরের অন্য সময়ও সেই পরিবারগুলিকে দিয়ে কাজ করানো হয়েছে। ফলে পরিবারপিছু গড় বেড়েছে। কিন্তু, তাতে বঞ্চিত হয়েছে অন্য পরিবারগুলি। তারা পঞ্চায়েতে দরবার করেও কাজ পায়নি। আর তা নিয়েই ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে তাদের মনে।
যদিও মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ দেওয়ার পরই জেলাশাসক বিজয় ভারতী জানিয়ে দেন, এই নির্দেশ মতোই কাজ হবে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত জুন মাসে ১০০ দিনের প্রকল্পের বিষয়ে একটি রূপরেখা তৈরি করা হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় প্রদত্ত জবকার্ডের মূল্যায়ন করা হবে। কোনও অযোগ্য ব্যক্তি তা পেয়ে থাকলে বা কোনও যোগ্য পরিবার জবকার্ড না পেলে মূল্যায়নের মাধ্যমে তাদের চিহ্নিত করা। সেই অনুযায়ী পদক্ষেপও করে জেলা প্রশাসন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.