সৌরভ মাজি, বর্ধমান: কোনও চালক টোটো বা ই-রিকশা নিয়ে শহরের যত্রতত্র চলাচল করতে পারবেন না। তার জন্য টোটো বা ই-রিক্সা চালকদেরও এবার ড্রাইভিং লাইসেন্স করাতে হবে। তাতে চালকের পরিচিতি ছাড়াও লেখা থাকবে রুটেরও নাম। এছাড়া রাজ্যের পরিবহণ সচিবের নির্দেশ মেনে সব টোটোকে বদলে ই-রিকশা চালু করা হচ্ছে। একইসঙ্গে ই-রিকশার জন্য বর্ধমান শহরে নির্দিষ্ট রুট করে দেওয়া হচ্ছে। প্রতি রুটে কত সংখ্যক ই-রিকশা চলাচল করবে তাও নির্দিষ্ট করা হচ্ছে। পাশাপাশি, ই-রিকশার ভাড়াও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে শহরজুড়ে চলা বেআইনি টোটোর দাপট কমবে। একইসঙ্গে শহরের যানজটও নিয়ন্ত্রণে আসবে। পাশাপাশি, অধিক ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের পকেট কাটার প্রবণতাও কমবে।
গত ২৬ জুলাই রাজ্যের পরিবহণ সচিব সব জেলাশাসককে টোট ও ই-রিকশা সংক্রান্ত একটি নির্দেশিকা পাঠিয়েছেন। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশিকা অনুয়ায়ী পরিবহণ সচিব ওই নির্দেশিকা জারি করেন। তার ভিত্তিতে পুরনো যে সব টোটো চলাচল করছে তা বাতিল করা হয়েছে। পরিবহণ দপ্তরের নির্দিষ্ট করে দেওয়া ই-রিকশাই ব্যবহার করা যাবে রাজ্যে। সেই নির্দেশ মেনে পূর্ব বর্ধমান জেলাতেও পুরনো টোটো বাতিল করে গাইডলাইন অনুযায়ী ই-রিকশা চালু করা হচ্ছে। জেলায় সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। জেলাশাসক বিজয় ভারতী জানান, নির্দেশিকা মেনে পদক্ষেপ করা হচ্ছে। পুরনো টোটো যেসব চলাচল করছে তা আর রাখা যাবে না। ই-রিকশা চালাতে হবে। সংশ্লিষ্ট সকলকেই তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) রজত নন্দা জানান, প্রত্যেক ই-রিকশা চালককে ড্রাইভিং লাইসেন্স করাতে হবে। তাতে সেই ই-রিকশার নম্বর ও রুটের কথা উল্লেখ থাকবে। এর ফলে যত্রতত্র আর ই-রিকশা নিয়ে কোনও চালক চলাচল করতে পারবেন না।
সরকারিভাবে জেলায় দুই হাজারের কিছু বেশি টোটো বর্ধমান শহরে রয়েছে। কিন্তু তার কয়েকগুণ বেশি টোটো চলাচল করে শহরে। এর ফলে অফিস টাইমে শহরের বিভিন্ন জায়গায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। চলাচল করতে নাভিশ্বাস ওঠে শহরবাসী। বিসি রোডে বড়বাজার থেকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল যাওয়ার রাস্তা, হাসপাতাল সংলগ্ন আফতাভ অ্যাভিনিউ, ও হাসপাতালের পূর্বদিকের রাস্তা যানজটে স্তব্ধ হয়ে যায়। এছাড়া পারবীরহাটা, স্টেশন এলাকা-সহ বিভিন্ন জায়গায় টোটোর দাপটে চালচল করা দুঃসহ হয়ে ওঠে। পুলিশের তরফে যানজট নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হলেও জট ছাড়ে না। এবার হাই কোর্টের নির্দেশের পর পরিবহণ সচিবের নির্দেশিকা জেলায় এসেছে। তার ভিত্তিতে পদক্ষেপ শুরু করেছে প্রশাসন। শুধু বর্ধমান শহরই নয়, জেলার সর্বত্রই একই নিয়ম বলবৎ করা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.