রিংকি দাস ভট্টাচার্য: শেষ চৈত্রে সেলের বাজারের মতোই ক’দিন তাপমাত্রাও ‘ছাড়’ দিচ্ছে। এপ্রিল মাস পড়লেও থার্মোমিটারের পারদ সেরকম উঠছে না। কিন্তু আর্দ্রতার ফাঁসে বেড়ে যাচ্ছে অস্বস্তি। আবহাওয়াবিদদের কথায়, বঙ্গোপসাগরে সক্রিয় ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে। যার জেরে শহরের আকাশ কালো করে আসছে। মেঘ জমছে, অথচ বৃষ্টি হচ্ছে না। রহস্যজনকভাবে চুরি হয়ে যাচ্ছে কালবৈশাখীও।
গত কয়েকদিনে এমনই অদ্ভুত পরিস্থিতির সম্মুখীন কলকাতা-সহ আশপাশের এলাকা। যার পিছনে দুর্বল বজ্রগর্ভ মেঘকেই দুষছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের ব্যাখ্যা, পশ্চিমের জেলাগুলিতে বৃষ্টি দিয়ে আসতে আসতে যাত্রাপথেই দুর্বল হয়ে পড়ছে বজ্রগর্ভ মেঘগুলি। তাই বৃষ্টির মুখ দেখছে নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম ও বর্ধমানের কিছু এলাকা। “জেলায় জেলায় ঝড়বৃষ্টির অনুকূল পরিবেশ থাকলেও বুধবার কলকাতা ও আশপাশে বৃষ্টির সম্ভাবনা কম।” বুধবার সকালে একথা জানান কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের উপ মহানির্দেশক সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার শহরে ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা প্রবল। যার জেরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এক ধাক্কায় অনেকটা নেমে আসতে পারে বলে অনুমান আবহাওয়াবিদদের।
[আরও পড়ুন- কাঁটাতারের গেরোয় আটকে উন্নয়ন, ভোটে নিরুত্তাপ হিলি সীমান্ত]
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ সংলগ্ন ঝাড়খণ্ডের উপর রয়েছে ঘূর্ণাবর্ত। সেটাই সমুদ্র থেকে জোরালো বাতাস টেনে এনে পরিমণ্ডলে ঢুকিয়ে দিচ্ছে। তাঁদের বক্তব্য, বছরের এই সময়ে জোরালো দখিনা বাতাসের আনাগোনা একেবারে অস্বাভাবিক নয়। তবে এতে আবহাওয়ার নির্দিষ্ট ছন্দ ব্যাহত হয় বিলক্ষণ। তাঁদের কথায়, স্বাভাবিক নিয়মে রাঢ়বঙ্গের সঙ্গে সঙ্গে কলকাতার তাপমাত্রাও এসময় বাড়ার কথা। কিন্তু কলকাতা ও লাগোয়া জেলাগুলির সর্বোচ্চ তাপমাত্রা মূলত স্বাভাবিকের আশপাশেই রয়ে গিয়েছে।
[আরও পড়ুন-‘একটু ছাড় দিতে হবে’, বাইক ব়্যালিতে হেলমেটহীন সমর্থকদের হয়ে সওয়াল শতাব্দীর]
এদিকে ঘূর্ণাবর্তের কাঁধে ভর করে মার্চের শেষে দেখে মিলছে কলকাতার চিরচেনা প্যাচপেচে গরমের। যার জেরে দিনভর ঘেমে একশা হতে হচ্ছে কলকাতাবাসীকে। আলিপুর হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, বুধবারও পরিস্থিতির তেমন কোনও পরিবর্তন হবে না। ঝড়-বৃষ্টি হওয়ারও তেমন কোনও সম্ভাবনা নেই। যদিও এদিন সকাল থেকে শহরে মেঘ-রোদের লুকোচুরি চলেছে। তাপমাত্রার বাড়বাড়ন্ত না থাকলেও সর্বোচ্চ আর্দ্রতার পরিমাণ ৯৩ শতাংশের বেশি থাকায় হাঁসফাঁস গরমে কেটেছে দুপুর।
[আরও পড়ুন- দুই মন্ত্রীকে নিয়ে মহামিছিল করে মনোনয়ন জমা দিলেন মৌসম]
তবে আশার আলো দেখাচ্ছে আলিপুর। আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, ঝাড়খণ্ডের মালভূমি গরম হতে শুরু করেছে। এবার কলকাতায় কালবৈশাখীর দেখা মিলতে পারে। প্রসঙ্গত, ঝাড়খণ্ড ও লাগোয়া অঞ্চল বছরের এ সময়টায় যত বেশি তেতে ওঠে, ততই কালবৈশাখীর সম্ভাবনা বাড়ে। গত কয়েকদিন ধরেই ওই তল্লাটে তাপমাত্রার ঊর্ধ্বগতি দেখেই ওঁদের এই অনুমান। সম্প্রতি নয়াদিল্লির মৌসম ভবনের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, চলতি বছর এপ্রিল-মে মাসেই আসল খেল দেখাবে গ্রীষ্ম। রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের পাশাপাশি খাস শহর কলকাতাও তাপপ্রবাহে ভাজা ভাজা হতে পারে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.