টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: নবান্ন অভিযানে DYFI নেতার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। রাজনৈতিক দূরত্ব ভুলে এদিন মৃতের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে এসেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সন্তানহারা পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে চাকরি দেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাব মেনে নিলেও চাকরির জন্য শর্ত রাখলেন মৃত DYFI নেতা মইদুল ইসলাম মিদ্দার স্ত্রী আলেয়া বিবি। সঙ্গে জানিয়ে দিলেন, “দোষীদের শাস্তি চাই”
কোতলপুরের চোরকোলা গ্রামের বাসিন্দা মইদুল ইসলাম মিদ্দা। পেশায় অটো-টোটো চালক। দিনপাত করে অটো, টোটো কিনেছিলেন তিনি। সেই গাড়ি চালিয়েই পরিবার পাঁচ সদস্যের পেট চালাতেন মিদ্দা। পরিবারে রয়েছেন মিদ্দার মা, স্ত্রী আলিয়া বিবি, দুই সন্তান ও এক ভাগ্নি। তিনিই ছিলেন পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্য। আপাতত মিদ্দাকে হারিয়ে পথে বসেছে পরিবার।
সন্তানহারা মা বলছেন, “একমাত্র সন্তানকে হারিয়েছি। কীভাবে পরিবার চলবে জানি না।” স্বামীকে হারিয়ে দিশাহারা আলে্য়া বিবিও। স্বামীর ‘খুনে’র দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেছেন তিনি। সঙ্গে জানিয়েছেন, “অল্প পয়সার চাকরি দিলে চলবে না। পরিবারের সদস্যদের প্রতিপালন করার মতো চাকরি দিতে হবে।” প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, মিদ্দা রাজনীতি করতেন। তবে সম্প্রতি বাম রাজনীতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বেড়েছিল। তার পরই শুক্রবার নবান্ন অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন তিনি।
মইদুল ইসলাম মিদ্দার পরিবার জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার খবর পেয়েছিলেন মিদ্দা অসুস্থ হয়েছেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার খবরও পেয়েছিল পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু কীভাবে অসুস্থ হলেন কিংবা কোথায় চিকিৎসা চলছে তাঁর, কিছুই জানতেন তাঁরা। এভাবে যে হঠাৎই চলে যাবে তাঁদের ছেলে তা এখনও ভাবতেই পারছে না চোরকোলা গ্রামের বাসিন্দারা। কিন্তু তাদের কোলের ছেলের মৃত্যুর জন্য দায়ী, তাদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছে গোটা গ্রাম।
চাকরি, শিক্ষা-সহ একাধিক দাবিতে ১১ ফেব্রুয়ারি নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল বাম ছাত্র সংগঠন। বামেদের অভিযানকে কেন্দ্র করে রীতিমতো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল কলকাতা।পুলিশের লাঠি, জলকামানের আঘাতে প্রায় ৪০ জনকে অসুস্থ হয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যেই ছিলেন বাঁকুড়ার মইনুল ইসলাম মিদ্দা। গুরুতর জখম মিদ্দার লড়াই শেষ হয় সোমবার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.