সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: মৃতদেহ আটকে রেখে টাকা আদায়ের ছক কষে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। এই অভিযোগে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তুমুল ভাঙচুর চালালেন রোগীর পরিবারের লোকেরা। নার্সিংহোমের এক ম্যানেজারকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার সাতসকালে তুমুল উত্তেজনা ছড়াল দুর্গাপুরের সিটি সেন্টার এলাকায়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
[পর্দাফাঁস কিডনি পাচারচক্রের, নৈহাটি থেকে গ্রেপ্তার মহিলা-সহ সাত]
মৃত ওই রোগীর নাম চন্দন দাস। বাড়ি দুর্গাপুর-ফরিদপুরের ব্লকের প্রতাপপুরে। জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকালে স্থানীয় কমলপুর এলাকায় রাস্তা থেকে চন্দনবাবুকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রথমে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লক হাসপাতালে। সে্খান থেকে স্থানান্তর করা হয় দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে। মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক জানান, শরীরে বিষক্রিয়ার কারণেই জ্ঞান হারিয়েছেন চন্দন দাস। তাঁকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। শুক্রবার রাতেই গুরুতর অসুস্থ ওই ব্যক্তিকে ভরতি করা হয় দুর্গাপুর সিটি সেন্টারের একটি নার্সিংহোমে।
পরিবারের লোকেদের অভিযোগ, চন্দনবাবু কেমন আছেন, সে সম্পর্কে তাঁদের কিছু জানায়নি নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। সোমবার সকালে যখন দু’জন পরিচিত চিকিৎসককে নিয়ে ওই নার্সিংহোমে পৌঁছন চন্দন দাসের এক আত্মীয়, তখন তাঁদের নার্সিংহোমে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। এই নিয়ে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে রোগীর বাড়ির লোকের একপ্রস্ত তর্কাতর্কিও হয়। শেষপর্যন্ত অবশ্য ওই দুই চিকিৎসককে নার্সিংহোমে ঢুকতে দেওয়া হয়। পরিবারের লোকেদের দাবি, ওই দুই চিকিৎসক জানান, চন্দন দাস বহু আগেই মারা গিয়েছেন। কিন্তু, মৃত্যুসংবাদ চেপে রেখে রোগীর বাড়ির লোকেদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের চেষ্টা করছে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। এরপরই পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে।
[ছাগল নিয়ে বচসার জেরে বাবা ও ছেলেকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা]
দুর্গাপুরের সিটি সেন্টার এলাকা ওই নার্সিংহোমে চড়াও হন চন্দন দাসে পরিবারের লোকেরা। চলে তুমুল ভাঙচুর। নার্সিংহোমের রিসেপশনটি তছনছ করে দেওয়া হয়। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় সিসিটিভি মনিটর, ক্যামেরা, এলইডি টিভি, কম্পিউটার-সহ নার্সিংহোমের একাধিক সামগ্রী। নার্সিংহোমের ম্যানেজারকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার রীতিমতো উত্তেজনা ছড়িয়েছে দুর্গাপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র সিটি সেন্টারে। পুলিশ গিয়ে কোনওমতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
ছবি: উদয়ন গুহরায়
[বাঁশের সাঁকোর গেরোয় জুটছে না পাত্রী, ভোটের ইস্যু তাই পাকা সেতু]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.