চঞ্চল প্রধান, হলদিয়া: সাত গ্রামের পুজো। তাই কমিটির নাম সপ্তগ্রাম। অন্যদিন ফলে মূলে ভোগ হলেও নবমীতে অবশ্যই গুড়পিঠা। কথিত আছে, এই গুড়পিঠা খেতেই নাকি সাত গাঁয়ের কাঁধে চেপে এখানে আসেন দেবী দুর্গা। আরও একটি নজরকাড়া বিষয় হল এই পুজোর অষ্টমীর অঞ্জলি। সেখানে রামের পাশে দাঁড়ান রহিম। সালেমার পাশে নবনীতা। অষ্টমীতে যাঁরা লাইন দিয়ে অঞ্জলি দেন, তাঁদের হাতে ফলমূল তুলে দেন স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। সব মিলিয়ে এক অন্য আবহাওয়া পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারের দেবী বর্গেশ্বরী মন্দিরের শারদোৎসবে।
কথিত আছে, ১৭৪০ খিস্টাব্দে মারাঠা অশ্বারোহী বর্গিরা কংসাবতী নদী অতিক্রম করার উদ্দেশ্যে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারের বরগোদা গ্রামে অস্থায়ী সৈন্য শিবির স্থাপন করে। তাদের আগ্রহেই তখন প্রতিষ্ঠিত হয় দেবী বর্গশ্বেরী মন্দির। আর তখন থেকেই মায়ের আরাধনা শুরু হয়। কথিত আছে মা বর্গভীমার ভগিনী মা বর্গেশ্বরী। মন্দিরের ১০০ মিটারের মধ্যে রয়েছে একটি মাজার। আর সেখানেই এই পুজো যেন হয়ে উঠেছে সম্প্রীতির আরাধনা। উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ এখানে পরস্পরের ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। নবমীর দিন মাকে দেওয়া হয় গুড়পিঠা।
এই প্রসাদ পাওয়ার জন্য বরগোদা, বাবুলপুর, চকজিঞাদিঘি, ভবানীচক, পাঁচবেড়িয়া, পিঁয়াজবেড়িয়া, রাম ভদ্রেশ্বরের বাসিন্দারা ভিড় জমান। যেহেতু এই পুজোর একটি বিস্তৃত ইতিহাস আছে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা বলে, তাই স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই পুজো যাতে হেরিটেজের তকমা পায় তার জন্য চেষ্টা চলছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.