শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: মর্ত্যে চারদিন কাটিয়ে কৈলাসে ফিরেছেন মা। বাতাসে মন কেমনের হাওয়া। বিষাদ কাটিয়ে শুরু হয়েছে কালীপুজোর প্রস্তুতি। তবে অসময়ে দশভুজার আরাধনায় মেতেছে জলপাইগুড়ির তিস্তা পাড়ের সিদ্ধবাড়ি। তবে এই পুজো পরিবারের মধ্যে আবদ্ধ নেই। হয়ে উঠেছে গ্রামের পুজো। রূপ পেয়েছে মিলন উৎসবের।
কথিত আছে, বিসর্জনের পর মা কৈলাস যাওয়ার পথে তিস্তা তীরস্থ এলাকায় রাত কাটান। সেই রীতি মেনে আজও একাদশীর দিন পুজো হয় তিস্তার পূর্ব প্রান্তে। সেই পুজো পরিচিত ভাণ্ডানী পুজো নামে। তিস্তার পশ্চিম প্রান্তে সিদ্ধবাড়িতে লক্ষ্মীপুজোর পরে প্রথম রবিবারে হয় মা মহামায়ার আরাধনা।
শারদ উৎসবের ডিঙিয়ে লক্ষ্মীর পুজোর পরে মায়ের বোধন কেন? পরিবারের বর্তমান সদস্যদের কথা অনুযায়ী, প্রায় দেড়শো বছর আগে তাঁদের প্রপিতামহ জমিদার সিদ্ধনাথ রায় দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই পুজোর সূচনা করেন। তবে এই বাড়ির পুজো চারদিনের নয়। সকালে বোধন, রাতেই দেবীর বিসর্জন। পরের দিন সকালে প্রতিমা নিরঞ্জন দেওয়া হয়।
দশমীর পরে পুজো হলেও পুজোর নিয়মাবলিতে কোনও পরিবর্তন নেই। ষষ্ঠীর রীতি অনুযায়ী দেবীর বোধন। সপ্তমী অনুযায়ী কলাবউ স্নান। অষ্টমী পুজো। নবমীর আগে সন্ধিপুজো। সবই মানা হয় অক্ষরে অক্ষরে। সবই হয় একদিনে। দেবীর রূপেও নেই কোনও পরিবর্তন।
পরিবারের সদস্য সুশান্তকুমার রায় বলেন, “আমাদের প্রপিতামহ সিদ্ধনাথ রায় দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই পুজো শুরু করেন। পুজোর বয়স প্রায় দেড়শো বছর। সব নিয়মই মানা হয়। তবে ষষ্ঠী থেকে দশমীর পুজো হয় একদিনেই। মায়ের আরাধনা আমাদের পরিবারের মধ্যে আটকে নেই। গোটা গ্রামের মিলন উৎসবে পরিণত হয়েছে। পুজো উপলক্ষে মেলাও বসে। সারা রাত বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।” পরিবারের সদস্যরা তো বটেই, সঙ্গে গ্রামবাসীরা, এমনকী আশেপাশের গ্রাম থেকেও প্রচুর মানুষ এই পুজো দেখতে আসেন। মায়ের আরাধনা তাঁদের কাছে বচ্ছরকার মিলন মেলা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.