Advertisement
Advertisement
Durga Puja 2024

বিসর্জন শেষে বাড়ি ফেরা, ঢাকি পরিবারে অন্য আনন্দ

গৃহিনী ও মেয়ের জন্য নতুন জামাকাপড় কিনে ঘরের দরজায় পা রাখেন বিকাশবাবু।

Durga Puja 2024: Dhakis are returning home after the festival

বাড়ি ফেরার পথে। ছবি: সুকান্ত চক্রবর্তী।

Published by: Subhankar Patra
  • Posted:October 15, 2024 2:23 pm
  • Updated:October 15, 2024 5:25 pm  

শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: হাওড়ার মুখার্জী পাড়ায় ঢাক বাজাতে গিয়েছিলেন চন্দ্রকোনার বিকাশ দাস। সঙ্গে নিয়েছিলেন ছেলেকেও। বির্সজনের পর সোমবার বাড়ি ফিরেছেন। উৎসবের মরশুমে বাড়তি উপার্জন হওয়ায় খুশি তিনি। খুশি স্ত্রী ও মেয়েও। তাই চন্দ্রকোনার শ্রীরামপুর গ্রামের দাস পরিবারে একটু বাড়তি উন্মাদনা। বাড়ি ফেরার পথে ঝুলিতে ঢুকেছে ছয় হাজার টাকা। সঙ্গে দুটো নতুন রঙিন শাড়ি আর কিছু দান সামগ্রী। বাড়তি হিসাবে পুজোর(Durga Puja 2024) সেই ষষ্ঠী থেকে বাবা-ছেলের থাকা ও খাওয়া ফ্রি।

সোমবার বাড়ি ফিরতে ফিরতে সকাল গড়িয়ে দুপুর। চন্দ্রকোনা শহরে বাস থেকে নেমে গৃহিনী ও একমাত্র মেয়ের জন‌্য নতুন জামাকাপড় কিনে ঘরের দরজায় পা রাখেন বিকাশবাবু। স্বভাবতই খুশিতে ডগমগ মায়ের সঙ্গে মেয়ে সুমনা।

Advertisement

পুরুষানুক্রমে ঢাক ও ঢোল বাজান বিকাশবাবুরা। সারা বছর তো আর ঢাক, ঢোলের বায়না জোটে না। জমি-জায়গা নেই-ই। বাস্তু ভিটাটুকু সম্বল। অন্যের জমিতে মজুর খেটেই সংসার চালাতে হয় তাঁকে। যেখানে পেটের ভাত যোগাতেই হিমসিম খেতে হয়, সেখানে ছেলেমেয়ের লেখাপড়া বিলাসিতা বিকাশের কাছে। তাই ছেলে-মেয়ের লেখাপড়া প্রাথমিক স্কুলের গন্ডি-ই পেরোয়নি। বরং পারিবারিক ঐতিহ‌্য মেনে ঢাক, ঢোলের কাঠি উঠেছে ছেলে সুমনের হাতে।

ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে যেমন মাঠে মজুরের কাজ করতে যান, তেমনই পুজোয় ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে হাওড়ার পুজোমণ্ডপে গিয়েছিলেন তিনি। মুখার্জী পাড়ার পুজোমণ্ডপে বাবা বাজান  ঢোল আর ছেলে বাজিয়ে ছিল ঢাক। বিকাশ বলেন, “একশো দিনের কাজ তো নেই। সেই কাজ হলে সংসারটা কোনও রকমে চলে যেত। তাই পুজোয় ডাক পেলেই চলে যাই। পুজোর কদিন থাকা- খাওয়া সঙ্গে বাড়তি কয়েক হাজার টাকা এসে যায়। ছেলেমেয়ের নতুন জামাকাপড় তো কেনা হয়ে যায়। তার পরও হাতে কিছু থাকে। এতে মন্দ কী?”

শ্রীরামপুর গ্রামের এই পাড়া ঢাকি পাড়া নামেই পরিচিত। পুজোর সময় সবকটি পরিবারই বাইরে চলে গিয়েছিল ঢাক বাজাতে। কেউ গিয়েছেন কলকাতায়, তো কেউ আবার মুম্বই, দিল্লিতে। তাঁদের অনেকে আবার সবে কৈশোরে পা দিয়েছেন। কেউ বাজিয়েছে ঢাক তো কেউ বাজিয়েছে কাঁসর-ঘণ্টা। কেউ আবার বাবা, কাকার সঙ্গে ঢোল ও ঢাক বাজানোর তালিম নিয়েছেন।

যেমন বিকাশবাবুর ছেলে বছর ১৫-র সুমন পুজোমণ্ডপে বাজিয়েছেন ঢাক। একেবারে প্রত‌্যন্ত গ্রাম ছেড়ে এই প্রথম শহরে পা দেওয়া সুমনের। সুমন বলেন, “আমি বাবার সঙ্গে গিয়েছিলাম। বাবার কাছে খানিকটা তালিমও নিলাম একইসঙ্গে ঢাক ও ঢোল বাজানোর। একইসঙ্গে শহরের পুজো দেখা আর বাড়তি রোজগার পেয়ে খুবই ভালো লাগছে। বাবার সঙ্গে যা চুক্তি ছিল, সেই টাকাই দিয়েছেন উদ্যোক্তারা। ওই টাকায় বাবা আমার ও দিদির জন‌্য নতুন জামাকাপড় কিনে দিয়েছে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement