অর্ণব দাস, বারাকপুর: ওদের কেউ জন্মাবধি দুগ্গা ঠাকুরের মুখ দেখেনি। কেউ বা চোখে দেখলেও অন্তরে গেঁথে নিতে পারেনি উমার মমতাভরা দৃষ্টি। কিন্তু ওরা জানে, ফি-বছর মর্ত্যধামে চার-পাঁচটা দিন মানুষ অনাবিল আনন্দে মেতে ওঠে। তাদের সঙ্গে মেতে ওঠে ওরাও। ওরা নামে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু-কিশোররা। মা দুর্গাকে (Durga) তারা কেমন দেখে, কীভাবেই বা অনুভব করে, তাদের সেই অন্তর্দৃষ্টির উপর ভিত্তি করেই এবার গড়ে উঠছে বরানগর (Baranagar) টবিন রোডের হাসিখুশি ক্লাবের এবারের পুজোর থিম। থিমেও যেমন থাকছে অভিনবত্বের ছোঁয়া, তেমনই প্রতিমাতেও থাকছে চমক। উঁহু! প্রতিমার শৈলীতে নয়, ক্লাবের দ্বিতীয় বর্ষের পুজোয় প্রতিমার চক্ষুদান করবে দৃষ্টিহীন (Blind) শিশুরা। ক্লাবের এহেন মহতী উদ্যোগকে স্বভাবতই সাধুবাদ জানিয়েছেন শুভাকাঙ্ক্ষী ও এলাকাবাসী।
বরানগর হাসিখুশি ক্লাবের পুজোর বয়স মাত্র একবছর। সামাজিক বার্তা দিতে গতবছর শুরু হয়েছিল দুর্গাপুজো (Durga Puja)। সারা বছরই ক্লাবের তরফে দুস্থ বাচ্চাদের জন্য একাধিক সহায়তামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। বেশ কয়েকবছর ধরেই তারা একাজ করে আসছে। সংগঠনের তরফে ৪৫ জন দুস্থ বাচ্চাদের পড়াশোনার দায়িত্ব নেওয়া হয়েছে। তাদের পুজোয় নতুন জামাকাপড় দেওয়া থেকে পুজো পরিক্রমা করানো সবই করেন ক্লাব কর্তারা। প্রথম বছরের উমা বন্দনায় থিম ছিল ফুটপাতের নবদুর্গা। পিছিয়ে পড়া বিভিন্ন শ্রেণির মোট ৯ জন মেয়েকে এই ‘হাসিখুশি’ ক্লাবের তরফে সহায়তা করা হয়েছিল।
পাশাপাশি এই মেয়েরাই পুজোর দিনগুলিতে দায়িত্ব নেওয়ার পাশাপাশি জমিয়ে আনন্দ করেছিল। দ্বিতীয়বারও থিমভাবনায় সামাজিকতার বার্তা দিয়ে নজির গড়ল এই ক্লাব। দ্বিতীয় বছরের পুজোর তত্ত্বাবধান করছে দৃষ্টিহীন এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন (Specially abled children)শিশুরা। ক্লাবের তরফে চারজন দৃষ্টিহীন এবং ছ’জন মানসিক ভারসাম্যহীন শিশুকে মণ্ডপ ভাবনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাদের ভাবনাতেই ফুটে উঠছে মণ্ডপের বহিরঙ্গ থেকে অন্দরসজ্জা। মায়ের চক্ষুদানও করবে দৃষ্টিহীন শিশুরা। মণ্ডপে সাবেকি সাজের মা দুর্গা আসছে মহালয়ার দিন। তারপরই হবে চক্ষুদান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.