সঞ্জিত ঘোষ, নদিয়া: পুজো আসলেই বাবার কাজের ব্যস্ততা বাড়ত। খড়, মাটি, রং, তুলি নিয়ে দিনরাত মজে থাকতেন বাবা। নাওয়া খাওয়ারও যেন সময় পেতেন না। ছোট্ট মেয়ে বাবার গতিবিধির উপর খেয়াল রাখত। বাবা কীভাবে প্রতিমা গড়ছেন, তা নজর রাখত। আর একটু বড় হওয়ার পর বাবাকে সাহায্যও করত সে। তবে এবার আর শুধু বাবাকে দেখা নয়। শিল্পী বাবার রেপ্লিকা গড়ল কিশোরী। যা নজর কেড়েছে সকলের।
নদিয়ার গাংনাপুরের বাসিন্দা প্রতিমা শিল্পী সঞ্জয় কাপুরিয়া কুম্ভকার সম্প্রদায়ভুক্ত নন। তাঁর বাবা ছিলেন সাউন্ড সিস্টেমের ব্যবসায়ী। সে কারণে একাধিক মণ্ডপে যেতেন। নানারকম প্রতিমা দেখে তাঁর ঠাকুর বানানোর সাধ জাগে। পুকুর পাড়ে লুকিয়ে লুকিয়ে ঝাঁটার কাঠি দিয়ে ঠাকুর বানাতেন তিনি। ছোটবেলায় একদিন একটি কালী প্রতিমা তৈরি করেন। তা দেখে প্রতিমা শিল্পীর বাবা ফেলে দেন। পরে সঞ্জয়বাবুর বাবা স্বপ্নাদেশ পান সেই কালীপ্রতিমা পুজো করার। স্বপ্নাদেশ পাওয়ার পর সঞ্জয়বাবুর নিজের হাতে বানানো কালীপ্রতিমার পুজো হয়। সেই শুরু। তার পর থেকে প্রতিমা তৈরিকেই পেশা হিসাবে বেছে নেন তিনি।
সঞ্জয়বাবুর সন্তান কোয়েলও বাবার মতো। হাতে কাজে অত্যন্ত পটু সে। ছোট থেকেই আঁকায় মন তার। ছোট থেকে প্রতিমা তৈরির প্রতি নজর তাঁর। বাবার কাজের দিকে নজর রাখত সে। এবার পুজোর ভিন্ন ভূমিকায় দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। বাবার প্রতিমা তৈরির মূর্তি গড়ল সে। একটি ক্যালেন্ডারে অবিকল বাবার অবয়ব গড়ে তুলল সে। যা নজর কেড়েছে সকলের। ইতিমধ্যে সেই রেপ্লিকা মণ্ডপসজ্জায় ব্যবহার করতে চাইছেন উদ্যোক্তারা। পুজো উদ্যোক্তাদের মধ্যে চলছে হুড়োহুড়ি। কোয়েলের হাতের জাদু মুগ্ধ করেছে সকলকে। ভবিষ্যতে তার ইচ্ছে আর্ট কলেজে পড়ার। তার ইচ্ছাপূরণ হোক, চাইছেন শিল্পী বাবা ও মা।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.