বাবুল হক, মালদহ: দশভুজাদের হাতেই দশভুজার পুজো। এই প্রথমবার। মালদহের (Maldah) বামনগোলার পাকুয়াহাটের দুর্গাপুজো এবার ব্যতিক্রমী। পুজোর দায়িত্ব সামলাচ্ছেন দুই মহিলা পুরোহিত (Women Priests)। আগে বেশ কয়েকটি পুজো করলেও দুর্গাপুজো এই প্রথম। ফলে একটু চিন্তা থাকলেও পুজোর কাজ সুসম্পন্নই হচ্ছে। অষ্টমীর পুজো শেষ করে আত্মবিশ্বাসের কথাই শোনালেন দুই পুরোহিত সীমা পাইন ও রূপারানি মণ্ডল। প্রথমবার দুর্গাপুজো (Durga Puja) করার অভিজ্ঞতা শোনালেন। তাঁদের বক্তব্য, এভাবে সকলেই যদি মহিলাদের পুজোয় এগিয়ে দেন, তাহলে সমাজের অনেকগুলো দুয়ার খুলে যেতে পারে।
বামনগোলার পাকুয়াহাটের রায়বাড়ি। এখানে বহু বছর ধরে দুর্গাপুজো হয়ে আসছে। তবে এবছর রায় পরিবার পুজো বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল প্রথমে। সেইমতো তাঁদের পুরোহিতকে না বলে দেওয়া হয়। তিনি অন্যত্র পুজোয় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে পরিবারের বধূরা ঠিক করেন, এবারও মায়ের পুজো হবে। তখনই তড়িঘড়ি পুজোর আয়োজন। এবং পুরোহিত খোঁজা শুরু।
রায়বাড়ির গৃহবধূ শুক্লা বিশ্বাস রায় বলেন, ”আমরা দেরিতে পুজোর সিদ্ধান্ত নেওয়ায় কোনও পুরোহিত পাচ্ছিলাম না। তখন পাড়ারই একজন জানালেন, তাঁর চেনা দুই মহিলা আছেন, যাঁরা পুজো করেন। তবে কখনও দুর্গাপুজো করেননি, সেকথাও জানান। আমি তখন তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ার কথা বলি। সীমা পাইন ও রূপারানি মণ্ডলের সঙ্গে আলাপ হয়, কথা হয়। ওঁদেরই দায়িত্ব দিই আমাদের বাড়ির পুজো করার। এই প্রথম আমাদের পুজো করছেন মহিলারা। পরিবারের এ নিয়ে কোনও আপত্তি ওঠেনি।”
আগে নানা পুজো করলেও সীমা কিংবা রূপারানি দেবী দুর্গাপুজোর পৌরহিত্য সামলাননি কখনও। ফলে রায়বাড়ির পুজোর দায়িত্ব পেয়ে চিন্তা খানিক ছিলই। কিন্তু ষষ্ঠীর পর থেকে সব কেটে গিয়েছে। এখন রীতিমতো আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে তাঁরা পুজো করছেন। অষ্টমী পুজো শেষে ঠাকুরদালানে দেখা হল তাঁদের সঙ্গে। শোনালেন নিজেদের বড় এক অভিজ্ঞতার কথা। সেইসঙ্গে বললেন, শুক্লাদেবী তাঁদের উপর ভরসা রেখেছেন বলেই আজ দুর্গাপুজোর মতো বড় দায়িত্ব সামলালেন। এভাবে যদি সকলেই মহিলা পুরোহিতদের উপর ভরসা রাখেন, তাহলে অনেক কিছুই বদলে যেতে পারে।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.