সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শুরু হয়েছিল ২৭৪ বছর আগে। রীতি মেনে আজও বারুইপুরের বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়িতে হয় দুর্গা পুজো। সামিল হল এলাকার বহু মানুষ।
১১৫৭ সালে পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদল থেকে জমিদার সহস্ররাম বন্দোপাধ্যায় আসেন বারুইপুরে। সেখানেই প্রতিষ্ঠা করেন মন্দির। তার পর থেকে বংশ পরম্পরায় দুর্গাপুজো হয়ে আসছে দুর্গা মন্দিরে। রথের দিন থেকে শুরু হয় কাঠামো পুজোর প্রস্তুতি। প্রতিপদে বসে ঘট। কুল পুরোহিতের সঙ্গে তন্ত্রধারক মিলে শুরু করেন চণ্ডীপাঠ। বাড়ির বধূ কল্পনা বন্দোপাধ্যায় জানান, যেদিন থেকে ঘট বসে দুর্গা মন্দিরে, সেইদিন থেকেই বাড়িতে মাংস, ডিম, পিঁয়াজ কিছুই খাওয়া হয় না। এই নিয়ম চলে লক্ষ্মীপুজো পর্যন্ত। বকখালির নবগ্রাম থেকে পুজোর কয়েকটা দিন কাজের জন্য ছেলেরা আসে। তাঁরাই সাফাই করা থেকে শুরু করে গঙ্গাজল আনা, সবটা করে থাকে। মায়ের বোধন শুরু হয় দরমার বেড়া দিয়ে বেলগাছ ঘিরে।
পরিবারের সদস্যা শিক্ষিকা রুমকি বন্দোপাধ্যায় জানান, “পুরানো ঐতিহ্যের ধারাকে বজায় রেখেই একমাত্র এই বাড়িতেই পুজার কয়েকটা দিন ফলকাটা থেকে শুরু করে নৈবদ্য সাজানো সব কাজ বাড়ির ছেলেরাই করে। দীক্ষিত মহিলারাই পায় পুজোর ভোগ রান্নার অনুমতি। বংশ পরম্পরায় বাড়ির পরিবারের গৃহবধূরা পালাক্রমে মায়ের বরণ সারেন।” তিনি আরও বলেন, “কলা বউ স্নান হয় মন্দিরের ভিতরেই। সপ্তমীর দিন মন্দির সংলগ্ন চাতালে হয় পাঁঠা বলি। অষ্টমীর দিন ও সন্ধিপুজোর সময় পাঁঠাবলির রীতিও রয়েছে। এমনকি, নবমীর দিনও পাঁঠা ও শস্য বলিও হয়ে থাকে। পুজোর কয়েকটা দিন মায়ের ভোগ বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। সপ্তমী থেকে নবমী মাকে ভোগে মাছ, মাংস, ডাল, খিচুড়ি সবই দেওয়া হয়। কিন্তু দশমীর দিন দেওয়া হয় পান্তা ভাত ও কচুর শাক। তবে দশমীতে বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়িতে অরন্ধন। তাই নবমীর ভোগের পরই ফের দশমীর রান্নার আয়োজন করা হয়। দশমীতে মহিলাদের সিঁদুরখেলা দেখতে ভিড় জমান স্থানীয়রা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.