সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ আমলে সূচনা হয়েছিল দশভুজার আরাধনা। নানা গল্পকথা আর বিশেষত্বে ভরা কোচবিহারের (Cooch Behar) বেলবাড়ির দুর্গোৎসব। আজও প্রাচীন রীতিনীতি মেনেই হয় দুর্গাপুজো (Durga Puja)। দিনহাটা মহকুমার দু’নম্বর ব্লকের নাজিরহাট গ্রাম পঞ্চায়েত অন্তর্গত বেলবাড়ি বাজার এলাকার সেই পুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেল। সাবেকি মতে ঢাক বাজিয়ে, খড়ের কাঠামোয় মাটির প্রলেপ দিয়ে সূচনা হল পুজোর। এখানে দেবী গৌরবর্ণা নন, রক্তবর্ণা। কেন এই ব্যতিক্রমী ব্যাপার, তার নেপথ্যেও রয়েছে কাহিনি। পুজোর প্রস্তুতি দেখতে দেখতে সেসব গল্পই শুনল ‘সংবাদ প্রতিদিন’।
কোচবিহারের বেলবাড়ি এলাকা একসময় ছিল জঙ্গলে ঘেরা। কথিত আছে, এখানে দেবীর নির্দেশে প্রায় তিনশো বছর আগে শুরু হয়েছিল দুর্গাপূজা। কোচবিহার মহারাজা জগৎ দীপেন্দ্র নারায়ণ নিজেও যোগ দিতেন এই পুজোয়। কালক্রমে এই পুজো হয়ে উঠেছে বারোয়ড়ি পুজো। চলতি বছর এই পুজোর বয়স ২৭৯ বছর। ১৭৪৩ সালে স্থাপিত দুর্গামন্দিরেই শুরু হয়েছে প্রতিমা তৈরির কাজ। আর তাতেই বেজে গিয়েছে পুজোর বাদ্যি। মূর্তি গড়ার সময় ঢাকি বাজাচ্ছেন ঢাক। গ্রামের মহিলা, পুরুষরা এসে যোগ দিচ্ছেন তাতে।
করোনা আবহাওয়া কাটিয়ে গোটা রাজ্য শারদ উৎসবে মেতে উঠেছে। সেই একইভাবে বেলবাড়ির সাধারণ গ্রামবাসীরাও শামিল দুর্গাপুজোয়। দু’বছরের খরা কাটিয়ে এবার মেলার আয়োজন করেছেন গ্রামবাসীরা। পাঁচ দিনের এই পুজো জমজমাট হয় এই গ্রামের স্কুলের মাঠে। কোচবিহারের প্রায় প্রতিটি পুজোর মতো এই পুজোর সঙ্গেও জড়িত রয়েছে প্রচুর গল্প।
এখানে দেবী মূর্তির রং রক্তবর্ণা। বহু বছর আগে একবার রং পরিবর্তনের চেষ্টা করা হয়েছিল, যার ফল হয়েছে মারাত্মক। ওখানেই প্রাণ হারিয়েছিলেন সেই সময়ের মৃৎশিল্পী। তারপর থেকে আর দেবীর গাত্রবর্ণ বদলের কোনও ঝুঁকি নেওয়া হয়নি। কোনও অবস্থাতেই অশুচিভাবে বলি দেওয়া যায় না এই মন্দিরে। বলির খাড়া চটকে ওঠে বলে জানান গ্রামবাসীরা। ঐতিহ্যবাহী গ্রাম বাংলার এই পুজো আজও হয়ে থাকে বেলবাড়িতে নানা প্রচলিত লোককথার উপর ভিত্তি করে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.