দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: অভাবের তাড়নায় এক মাসের শিশু সন্তানকে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তার মায়ের বিরুদ্ধে। হুগলির কোন্নগরের অরবিন্দ পল্লির ঘটনা। যদিও অভিযুক্ত মা শিশু সন্তানকে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর রবিবার সকালেই শিশুটিকে উদ্ধার করে উত্তরপাড়া থানার পুলিশ। শিশুটিকে শিশুকল্যাণ সমিতির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আপাতত শিশুটি হোমেই রয়েছে। তবে বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল কর্মীদের যোগসাজশে ১০ হাজার টাকায় এক মাসের ওই শিশু সন্তানকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।
অরবিন্দ পল্লির বাসিন্দা ওই গৃহবধূর চার সন্তানের মা। সবচেয়ে ছোট সন্তানের বয়স মাত্র এক মাস। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত দু’দিন ধরে তাঁরা তিনটি সন্তানকে দেখতে পেলেও ১ মাসের শিশুপুত্রকে দেখতে পাননি। ওই মহিলাকে জিজ্ঞাসা করে জানা যায়, প্রতিবেশী ঝুম মণ্ডলের সাহায্যে ওই পুত্রসন্তানকে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছে মহিলা। প্রতিবেশীরাই উত্তরপাড়া থানায় খবর দেয়। পুলিশ তদন্তে নেমে ওই শিশুটিকে উদ্ধার করে। অভিযুক্ত মা অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে জানায়, তার স্বামী মদ্যপ অবস্থায় প্রতিদিনই তাকে অত্যাচার করত। বাড়ি ছেড়ে চলেও গিয়েছে সে। এই অবস্থায় চার সন্তানের খরচ সামলানোই দায় হয়ে গিয়েছিল। তাই প্রতিবেশী ঝুম মণ্ডলকে বিষয়টি বলেছিলেন। ঝুম তার এক মাসের পুত্রসন্তানকে দেখাশোনা করার জন্য একজনের হাতে তুলে দিয়েছে বলেই দাবি ওই শিশুপুত্রের মায়ের। বিনিময় ঝুম তাকে ১০ হাজার টাকা দেয় বলেও দাবি তার। তবে সন্তান বিক্রি করে টাকা নেওয়ার অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে শিশুপুত্রের মা।
এই ঘটনায় লেগেছে রাজনীতির রং। বিজেপির শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শ্যামল বোসের অভিযোগ, তৃণমূল কর্মী বাপী মণ্ডল ও তার স্ত্রী ঝুম ওই গৃহবধূর সন্তানকে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দিয়েছে। এখন শাসক দলের কীর্তিকলাপ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। এদিকে, রবিবার সকালেই উত্তরপাড়ার বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল জানান এটা একটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে প্রচার চালানো হচ্ছে। তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই। যেহেতু সামনে পুরভোট তাই তৃণমূলের নাম জড়িয়ে কুৎসা, অপপ্রচার করা হচ্ছে। হগলি চাইল্ড লাইনের কো-অর্ডিনেটর গোপীবল্লভ শ্যামল জানান, পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে শিশুকল্যাণ সমিতির হাতে তুলে দিয়েছে। বর্তমানে শিশুটিকে হোমে রাখা হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.