ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: আর্থিক সাহায্য নেওয়ার পর সাহায্যকারীকে সাদা কাগজে সই করানোকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠল বীরভূমের ইলামবাজারের ছোটচক গ্রাম। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, গোপনে এনআরসি’র কাজ করতে এসেছেন ওই চার মহিলা। তাঁদের আটক করেন স্থানীয়রা। পরে পুলিশে খবর ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাঁদের থানায় নিয়ে যায়।
স্থানীয়দের দাবি, রবিবার সকালে বীরভূম ইলামবাজার থেকে এক কিশোরী-সহ চারজন মহিলা জয়দেব পঞ্চায়েতের ছোটচক গ্রামে যান। তাঁরা নিজেদের মহারাষ্ট্রের সোলাপুরের বাসিন্দা বলে পরিচয় দেন। তাঁরা জানান, গত বছরের বন্যাতে চাষের জমি জলের তলায় চলে গিয়েছে। তাই সেখান থেকে তাঁরা পশ্চিমবঙ্গে চলে এসেছেন। বাধ্য হয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে ভিক্ষা করছেন। একথা শোনার পর গ্রামবাসীরা তাঁদের অর্থ সাহায্য করতে শুরু করেন। অভিযোগ, গ্রামবাসীরা যাঁরা অর্থ সাহায্য করছেন, তাঁদের কাগজে সই করতে বলেন ওই মহিলারা। আর এই কথা গ্রামে ছড়িয়ে পড়তেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন গ্রামের প্রায় সকলেই। কারও কারও অভিযোগ, ভিক্ষুকের বেশে গ্রামে এনআরসি সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের কাজ করছেন তাঁরা। কিশোরী-সহ ওই চার মহিলাকে আটক করেন গ্রামবাসীরা। শুরু হয় জেরা। মহিলারা নিজেদের ভিক্ষুক পরিচয় দিলেও গ্রামবাসীরা তাদের গ্রাম থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। মহিলার চলে যেতে চাইলে তাঁদের আটক করেন গ্রামবাসীরা। খবর দেওয়া হয় ইলামবাজার থানার পুলিশকে। মহিলাদের উদ্ধার করে পুলিশ থানায় নিয়ে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা আনোরা বিবি বলেন, “মহিলারা গ্রামে এসে আর্থিক সাহায্য চাইছে। তারপরেই কাগজে সই করতে বলছে। আমার মনে হয় এরা এনআরসি’র জন্য গ্রামে এসেছে।” তৃণমূলের ইলামবাজার ব্লক সভাপতি শেখ তরু বলেন, “কিছু অবাঙালি লোক গ্রামে গ্রামে ভিক্ষা করতে গিয়ে মানুষকে কাগজে সই করাচ্ছে। এটা বিজেপির চক্রান্ত। গ্রামবাসীরা ওদের আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে হবে।” পুলিশ সূত্রে খবর, গত কয়েক দিন ধরে ইলামবাজারে ২০-২২ জনের একটি দল তাঁবু খাটিয়ে রয়েছে। এরা সারা দিন ইলামবাজারের বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে ভিক্ষা করে। আতঙ্কেই গ্রামবাসীরা এই কাজ করেছেন। মহিলাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ইলামবাজার থেকে তাঁদের চলে যেতে বলা হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.